কালীপুজোতে কালীঘাটে কেন দেবী মহালক্ষ্মীর পুজো করা হয়? এদিন মায়ের ভোগের বিশেষত্বই বা কি?
নিউজ ডেস্কঃ কলকাতার কোনায় কোনায় জড়িয়ে আছে হাজার হাজার ইতিহাস। অনান্য ঐতিহ্যময় স্থানগুলির মধ্যে কলকাতার কালীঘাট হল অন্যতম একটি ঐতিহাসিক স্থান। এখানে স্মৃতি আর সময় পথ হাঁটে হাত ধরাধরি করে। হাসি, কান্না, রাগ, অভিমান, ভালবাসার নিয়েই ‘কলি-কথা’… এবার ফিরে দেখা বিখ্যাত ‘কালীঘাট’ মন্দিরের সুপ্রাচীন ইতিহাস, যা কলকাতা শহরের চেয়েও প্রাচীন।
সতীর একান্নপীঠের অন্যতম কালীঘাট মন্দির এবং চার আদিশক্তিপীঠের অন্যতমও হল কালীঘাট। পুরাণ অনুসারে এখানে সতীর ডান পায়ের কয়েকটি আঙুল পড়েছিল। এখানে অধিষ্ঠিতা দেবী হলেন দক্ষিণাকালী। তিনিই এই শহরের অভিভাবক রূপে বিরাজমান। হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র এই তীর্থক্ষেত্রে পয়লা বৈশাখ, দুর্গাপুজো ও কালীপুজোয় বহু ভক্তের আনাগনা লক্ষ করা যায়।
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সমস্ত শক্তিপীঠে কালী বা শক্তির আরাধনা করা হলেও কালীঘাটে তা ব্যতিক্রম। এখানে কালীপুজোর দিন মহালক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। দেবী দক্ষিণাকালীকেই এদিন মহালক্ষ্মী রূপে পুজো করার রীতি আছে কালীঘাটে। অমবস্যায় অলক্ষ্মী দূর করে সন্ধ্যার পরে শুরু হয় লক্ষ্মীপুজো। সন্ধে নামতেই মন্দিরের চারদিকে সাত পাক ঘোরার পরে খড়ের পুতুলে আগুন ধরিয়ে দূর করা হয় অলক্ষ্মীকে। তারপর শুরু হয় মহালক্ষ্মীর পুজো। আর এটাই হল কালীপুজোর দিন কালিঘাট মন্দিরের মূল পুজো।
কালীঘাট কালী মন্দির- সতীর একান্নপীঠের অন্যতম একটি স্থান হল এই কালীঘাট। আর এই মন্দিরে দীপাবলির রাতে অর্থাৎ কালীপুজোর দিন মাকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয় বেগুনভাজা, পটলভাজা, কপি, আলু ও কাঁচকলা ভাজা, ঘিয়ের পোলাও, ঘি ডাল, শুক্তো, শাকভাজা, মাছের কালিয়া, পাঁঠার মাংস ও চালের পায়েস। তবে রাতে মা লক্ষ্মীকে নিরামিষ ভোগ নিবেদন করা হয় কালীঘাটে। লুচি, বেগুনভাজা, আলু ভাজা, দুধ, ছানার সন্দেশ আর রাজভোগ থাকে রাতে কালীঘাটের মায়ের ভোগে।