বিসিসিআইকে এফআইআর কপি পাঠাল কলকাতা পুলিশ
নিউজ ডেস্কঃ ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টিকিট বিক্রিতে অস্বচ্ছতা ও অনিয়ম থাকায় দেদার কালোবাজারি চলেছে। যাতে জড়িত বিসিসিআই, সিএবি ও বুকমাইশো। এই মর্মে অভিযোগ জমা পড়েছিল ময়দান থানায়।ওই তিন সংস্থার প্রতিনিধিদের তদন্তে সহযোগিতা করতে নোটিশ পাঠায় কলকাতা পুলিশ। বিসিসিআই তার পাল্টা হিসেবে এফআইআরের কপি চেয়ে পাঠায়। কলকাতা পুলিশের তরফে তা এবার পাঠিয়ে দেওয়া হলো বিসিসিআইয়ের কাছে।ময়দান থানায় প্রথমে তলব করা হয়েছিল সিএবি ও টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা পোর্টাল বুকমাইশো-র প্রতিনিধিদের। পরে তলব করা হয় বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রজার বিনিকে। শুধু ময়দান থানা নয়, বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে একাধিক আফআইআর দায়ের হয়েছে। তারই একটির ভিত্তিতে তলব করা হয় বিসিসিআই সভাপতিকে।
কোন এফআইআরের প্রেক্ষিতে বিসিসিআই সভাপতিকে তলব করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল বোর্ডের তরফে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী বলেছিলেন, ই়ডেন গার্ডেন্সে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি চেয়ে সভাপতি বা বোর্ডের কোনও প্রতিনিধিকে তলব করা হয়েছে।টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত নথি ৭ নভেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছিল। কলকাতায় ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের দিন ই়ডেনে হাজির ছিলেন রজার বিনি। ছিলেন সচিব জয় শাহ-সহ অন্যান্য পদস্থ বোর্ডকর্তারা। তবে কলকাতা পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁদের কেউ বা বোর্ডের কোনও প্রতিনিধি ময়দান থানায় যাননি। এরপরই এফআইআরের কপি চেয়ে পাঠানো হয়েছিল।
সিএবি ও বুকমাইশোর প্রতিনিধিরা অবশ্য থানায় গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বুকমাইশো দাবি করেছে তাদের ১৮ হাজার টিকিট দেওয়া হয়েছিল বিক্রির জন্য, যা নিমেষেই বিক্রি হয়ে যায়। সিএবি জানায় তারা বিভিন্ন ক্লাব ও সদস্যদের দেওয়ার জন্য ২৫,৯৭৫টি টিকিট নিয়েছে। তবে কমপ্লিমেন্টারি টিকিট-সহ প্রায় ২০ হাজার টিকিট নিয়েই ধোঁয়াশা আছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইডেন ম্যাচের টিকিট বিক্রি কাণ্ডে ৭টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। জনা ২০ ব্যক্তিকে টিকিটের কালোবাজারির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিএবি দাবি করেছে, টিকিট বিক্রির দায়িত্বে সিএবি নেই। বিসিসিআই টিকিট বিক্রির বন্দোবস্ত করেছে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে। কেউ টিকিট কেটে তা বেশি দামে বিক্রি করলে তা দেখার দায়িত্ব পুলিশেরই।
ইডেন ম্যাচের দিন দেখা গিয়েছে অনেকেই মূল দামের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে টিকিট কাটতে বাধ্য হয়েছেন। বিসিসিআইয়ের সহ সভাপতি রাজীব শুক্লা বলেছিলেন, বিসিসিআই সব সময় চায় বেশি সংখ্যক ক্রিকেটপ্রেমী মাঠে এসে খেলা দেখুন। বিভিন্ন রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাকে তা সুনিশ্চিত করতে বলাও হয় বোর্ডের তরফে।
সেই সংস্থাগুলির সঙ্গে বুকমাইশোর চুক্তিও হয়েছে বলে দাবি রাজীবের। তবে টিকিট হস্তান্তরিত করা-সহ নানা বিষয় কখনও সমর্থন করে না আইসিসি ও বিসিসিআই। এ বিষয়ে পুলিশের পদক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন রাজীব শুক্লা। স্টেডিয়ামে যত দর্শকাসন রয়েছে তার চেয়ে বেশি মানুষ টিকিটের দাবি করলে সেটা সম্ভব নয় বলেও জানান রাজীব। তবে যেহেতু বোর্ড সচিব জয় শাহ, যিনি অমিত শাহের পুত্র, সেখানে কলকাতা পুলিশের সক্রিয়তা অন্য মাত্রা যোগ করেছে গোটা প্রক্রিয়াতেই।