সুশান্তের পরিবারের বিরুদ্ধে করা সমস্ত আরোপ নিয়ে মুখ খুললেন সুশান্তের আইনজীবী
নিউজ ডেস্ক (অনামিকা নন্দী): কিছুদিন ধরে এই নিয়ে কথা হচ্ছিল যে, সুশান্তের মানসিক অবসাদ নিয়ে তার পরিবার জানতেন এবং সুশান্তকে বিভিন্ন ওষুধও তারা দিয়েছিলেন। এছাড়াও আরও নানা আরোপ লাগানো হয়েছে সুশান্তের বোনেদের ওপর। যা নিয়েই প্রেস কনফারেন্সে মুখ খুললেন সুশান্তের আইনজীবী বিকাশ সিং।
বিকাশ সিং জানালেন, ‘সুশান্তের পরিবার থেকে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা এখন অব্দি সামনে আনা হয়নি । সেখানে লেখা ছিলো সুশান্তের জীবনে রিয়া আসার পর থেকে সুশান্ত মানসিকভাবে অসুস্থ থাকতে শুরু করে। ২০১৯ এর পর্যন্ত সুশান্ত পুরোপুরি সুস্থ ছিল। কিন্তু রিয়ার আসার পর ওর মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং অসুস্থ থাকতে শুরু করে। সুশান্তের দিদিরা ওর প্রেসক্রিপশন ওর ট্রিটমেন্ট সংক্রান্ত সমস্ত কিছু জানতে চাইলে, সেখানে শুধু ট্যাবলেট এর নাম লেখা থাকে আর অন্য কিছু না। রিয়া যে প্রেসক্রিপশন সুশান্তের পরিবারকে দেখায় তাতে না অসুখের নাম আর না সেখানে ডাক্তারের কোন উল্লেখ রয়েছে। রিয়া আসার আগে অব্দি সুশান্ত সুস্থই ছিল কিন্তু রিয়া আসার পর থেকে সুশান্তের অসুস্থতা বেড়ে যায়। তাই সুশান্তের মৃত্যুর পেছনে রিয়া চক্রবর্তী দায়ী বলে সুশান্তের পরিবার মনে করে’। তিনি সঙ্গে এও বললেন, ‘সুশান্তের পরিবার জানে না, সুশান্তকে কি চিকিৎসা করানো হয়েছে বা কি ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়েছে’। তিনি সব সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘যে ৮ জুনের কথা রিয়া উল্লেখ করেছে, সেদিন সুশান্ত ওর বোন প্রিয়াঙ্কাকে ফোন করে বলেছিল যে তার অ্যানজাইটি হচ্ছে, সে ঘুমোতে পারছেনা। তাই তার বোন যে ওষুধ খায় সেই ওষুধ সে প্রেসক্রাইব করেছিল। কিন্তু সুশান্ত বলেছিল ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কেউ দেবে না তাই তার বোন তার চেনা একজন ডাক্তারের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন তৈরি করে সুশান্তকে পাঠিয়েছিল’। তিনি উল্লেখ করেন, ‘ কারোর ঘুম না আসলে সে যদি ওষুধ খায় তার মানে সে মানসিক অবসাদে ভুগছে তা নয়’। তিনি জানিয়েছেন, ‘এইসব বিষয় নিয়ে কিছু চ্যানেলে যেভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে যদি সেসব চ্যানেল তাদের সেই মিথ্যে প্রচার বন্ধ না করে তবে পরবর্তীকালে সুশান্তের পরিবার সেসকল চ্যানেল এর বিপক্ষে কোর্টে মানহানির মামলা করবে’। বিকাশ সিং জানিয়েছেন,সুশান্তের ফ্যামিলি থেকে বলা হয়েছে, ‘সুশান্তের বাবার অনুমতি ছাড়া সুশান্ত কে নিয়ে কোন বই লেখা যাবে না, কোন ছবি করা যাবেনা, কোন সিরিয়াল করা যাবেনা। এমনকি কোন ওয়েব সিরিজও করা যাবে না। আর যদি তা করা হয় তবে সেটা আইনত অপরাধ হবে এবং তার বিরুদ্ধে পরিবার থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে’। সূত্র থেকে জানা গিয়েছিল সুশান্তের বোন ও তার পরিবার মুম্বাই পুলিশের কাছে বয়ান দিয়েছে যে বয়ানে উল্লেখ রয়েছে তারা সুশান্তের মানসিক অবসাদের কথা জানত। কিন্তু সেই বিষয়ে বিকাশ সিং জানিয়েছেন, ‘মুম্বাই পুলিশের কাছে সুশান্তের পরিবার কখনোই বলেনি যে সুশান্ত সিং রাজপুত ডিপ্রেশনের কারণে সুইসাইড করেছে। মুম্বাই পুলিশ যে লিখিত বয়ান পরিবারকে দিয়ে তৈরি করেছে সেটা মারাঠি ভাষায় লেখা ছিল। আর মারাঠি ভাষা তার পরিবার পড়তে জানে না। তাই পরিবার জানে না তাতে কি লেখা ছিল। বিকাশ সিংহ জানিয়েছেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যম দেখিয়েছে সুশান্তের কিছু লাইফ ইন্সোরেন্স আছে যা পাওয়ার জন্য সুশান্তের পরিবার এতকিছু করছে কিন্তু আসলে সুশান্তের কোনদিনই কোন লাইফ ইন্সোরেন্স ছিল না’। তিনি এই বিষয় উল্লেখ করতে গিয়ে আবারও বলেছেন, ‘কোন সংবাদমাধ্যম যেন মিথ্যে প্রচার না করে’।
সুশান্তের আইনজীবী বিকাশ সিং বার বার করে উল্লেখ করেছেন, ‘তিনি সব মিডিয়াকে এই কারণেই সমস্তটা জানাচ্ছেন কারণ সব মিডিয়ার এটা জানার অধিকার আছে যে সুশান্তের পরিবার ভিক্টিম’।