ফি মূকুবের দাবিতে অভিভাবকদের বিক্ষোভ
নিউজ ডেস্ক: টিউশন ফি সহ অন্যান্য খাতে ফি মুকুবের দাবিতে মধ্যমগ্রামের দোলতলায় একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ, ভাঙচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল। স্কুল লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছোঁড়া থেকে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, সি সি ক্যামেরা সহ স্কুলের জানলার কাচ ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে অবিভাবকদের বিরুদ্ধে। পরে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।তবে উত্তেজনা থাকায় স্কুলে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।অবিভাবকদের অভিযোগ লক ডাউনের এই সময়ে টিউশন ফি সহ অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে স্কুল কতৃপক্ষ।কিন্তু এই বিষয়ে কতৃপক্ষের সাথে আলোচনার জন্য গত পাচ দিন ধরে ঘুরেছি।কিন্তু স্কুল কতৃপক্ষ এই বিষয়ে উদাসীন।
অতিমারির সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন খাতে পড়ুয়াদের থেকে বর্ধিত ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।এই নিয়ে এর আগেও বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন অবিভাবকরা।এবার কোরোনা পরিস্থিতিতে টিউশন ফি সহ বিভিন্ন খাতে ফি নেওয়ার অভিযোগে মধ্যমগ্রামের দোলতলায় বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বিরুদ্ধে সরব হলেন অভিভাবকরা।এদিন সকাল থেকেই স্কুলের গেটের সামনে জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বেশ কিছু অবিভাবকরা।বেলা বৃদ্ধির সাথে অবিভাবকদের বিক্ষোভের ঝাঝ আরও জোরালো হয়।একসময় স্কুলের অধক্ষ্য পলাশ সাহার কুশপুতুল নিয়ে গর্জে ওঠেন অভিভাবকরা।প্রথমে নিরাপত্তা রক্ষিদের গেট খোলার অনুরোধ করলেও তাতে কাজ না হওয়ায় অভিভাবকরা জোর করে গেট খোলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।স্কুল লক্ষ্য করে অহরহ ছোঁড়া হয় ইট,পাটকেলও।অবিভাবকদের চাপে এক সময় স্কুলের মেইন গেট খুলে দিতে বাধ্য হন নিরাপত্তা রক্ষীরা।স্কুলের ভিতরে ঢোকার পরেই অভিযোগ নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন অভিভাবকদের একাংশ।শুধু তাই নয়,ইট ছুঁড়ে স্কুলের সি সি ক্যামেরা এবং জানলার কাচ ভাঙচুরও করা হয়েছে বলেই অভিযোগ উঠেছে অবিভাবকদের বিরুদ্ধে। এর ফলে পরিস্থিতি এমশই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুলে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসে মধ্যমগ্রাম থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি ধিরে ধিরে স্বাভাবিক হয়।
এই বিষয়ে সোমা গুহ নামে এক অভিভাবক বলেন
ফি মুকুবের বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা পাঁচ দিন ধরে স্কুলের দরজায় দরজায় ঘুরছি।পরে স্কুলের অধক্ষ্য মাত্র দুই জন অবিভাবকদের সাথে কথা বলতে রাজি হন।
দেড় হাজার পড়ুয়াদের সমস্যা কিভাবে দুই জনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা যাবে।এই প্রশ্ন তুলেছেন অবিভাবকরা।কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে উদাসীন।আমরা চাই নি কোনও অশান্তি হোক।কিন্তু তারপরও অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।তিন মাসের টিউশন ফি সহ বিভিন্ন খাতে ফি মুকুব করার দাবি নিয়েই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি আমরা।কেন কোরোনা আবহে টিউশন সহ বিভিন্ন খাতে বর্ধিত ফি নেওয়া হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ।
মধ্যমগ্রামের ঐ ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অধক্ষ্য পলাশ সাহা বলেন এদিন যে ঘটনাটা স্কুলে ঘটেছে,সেটা অবিভাবকদের একাংশের পুর্ব পরিকল্পিত।এটাকে আমি দুরভাগ্য বলেই বলব।তিনি বলেন করোনা পরিস্থিতিতে ফি নেওয়ার ক্ষেত্রে হাইকোর্টে একটা কেস হয়েছিল।তার রায় অনুযায়ীই স্কুল এগিয়ে যাবে।অবিভাবকরা যতই হেনস্থা করুক না কেন।তিনি বলেন এদিন যারা স্কুলে ভাঙচুর করেছেন,তাদের অবিভাবক হিসেবে মানতে নারাজ। গত ৮ জুন অবিভাবকদের নিয়ে মিটিংয়ে তারা ফি কমানোর কথা বলেছিলেন।সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে ফি কমিয়ে দিয়ে গত বছরের ফি স্ট্রাকচারে এই বছরেও সেটাই নেওয়া হচ্ছে।তিনি বলেন যে সব অবিভাবক বরধিত হারে ফি জমা দিয়েছিলেন স্কুল কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরের মাসে সেটা এডজাস্ট করা হবে।অবিভাবকরা রাজিও হয়েছিলেন।কিন্তু হটাত করেই অবিভাবকদের একাংশ মেল করে জানান তিন মাসের টিউশন ফি মুকুব করতে হবে।অন্য ফি ও তারা দেবেন না।কিন্তু স্কুল কতৃপক্ষ হাইকোর্টের রায় মেনে চলভে।