মিডিয়া ট্রায়াল কি সত্যিই দরকারি?
নিউজ ডেস্ক (অনামিকা নন্দী): গত কয়েক মাসে একটি শব্দ ঘোরাফেরা করছে চারিদিকে। শব্দটি “মিডিয়া ট্রায়াল”। সম্প্রতি সুশান্ত সিং রাজপুতের ঘটনায় “মিডিয়া ট্রায়াল”-এর দরুন অনেককে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে বলে, দাবি জানিয়েছেন প্রচুর নামজাদা ব্যক্তিত্ব। এই নিয়ে এবার আদালত নিজে প্রশ্ন তুলেছে, সত্যিই কি মিডিয়া ট্রায়ালের প্রয়োজন সমাজে?
সংবাদমাধ্যমের কাজে রাশ টানা জরুরি বলে মনে করছে মুম্বাই আদালত। সংবাদমাধ্যমের “মিডিয়া ট্রায়াল” বা অপরাধী চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়ায় রাশ টানা উচিত বলে মনে করছে আদালত। এই বিষয়ে মহারাষ্ট্রের আট অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আগেই মামলা করেছিলেন বোম্বে হাইকোর্টে। সেই শুনানিতেই, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও জিএস কুলকার্নির ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছে, “‘অন্তর্তদন্তে’র নামে সংবাদমাধ্যম যা কিছু প্রকাশ করছে, তা তদন্তমূলক সাংবাদিকতার সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছে।” আদালতের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বে বা কর্তব্যে অতীতে রাশ টানা জরুরী মনে হয়নি, তার কারণ অতীতে তার প্রয়োজন হয়নি। তবে এখন পরিস্থিতি অন্য বলে মনে করছেন তারা।
অবমাননা আইনের ২(সি) ধারা মোতাবিক, বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা হচ্ছে কিনা এবং ফৌজদারি তদন্তের বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্র কতটা জরুরি! তা নির্দিষ্ট করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন শুনানির শুরুতেই নেতিবাচক বেশ কয়েকটি দিক দিয়ে, সংবাদমাধ্যমের ধারাবাহিকতাকে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের মতে পুলিশ ঠিক পথেই তাদের কাজে করছেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যম ভিন্ন দৃষ্টিতে দর্শকদের কাছে তা তুলে ধরায়, তাতে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে সকলকে। বলে মন্তব্য আদালতের।
প্রধান বিচারপতি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭ ও ৩৮ ধারা উল্লেখ করে বলেছেন, সংবাদমাধ্যম যদি এতটাই উৎসাহী হয়ে ওঠে কোন ঘটনায়, তাহলে তারা এজেন্সিকেই সহযোগিতা করে না কেন? মহারাষ্ট্র আদালতের মত “মিডিয়া ট্রায়াল” বাঞ্ছিত নয়। মহারাষ্ট্র আদালত প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “কোন সুশীল সমাজে মিডিয়া ট্রায়ালের কি সত্যিই প্রয়োজন?”