নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে স্বামী
নিউজ ডেস্ক: স্বামী বিবেকানন্দ একজন হিন্দু সন্যাসী, লেখক, সঙ্গীতজ্ঞ তথা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রধান শিষ্য। যার নাম শুধুমাত্র ভারতবর্ষে নয়, আমেরিকা ও ইউরোপের নানা দেশে তার পরিচিতির জয়জয়কার।
সালটা ছিল ১৮৬৩, জানুয়ারি মাসের ১২ তারিখ কলকাতার উচ্চবৃত্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন বাংলার মহান পুরুষ, সন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ। ছেলেবেলা থেকেই তার ছিল আধ্যাত্মিকতার প্রতি প্রবল আকর্ষণ। এমনকি তিনি মাঝে মাঝেই শিব , মহাবীর হনুমান , রাম , সীতার মূর্তির সামনে বসে ধ্যান করতেন। বাল্যবেলায় তার নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। ১৮৮১ সালে নরেন্দ্রনাথ প্রথম রামকৃষ্ণদেবের সাক্ষাৎ পান। নরেন্দ্রনাথ প্রথম রামকৃষ্ণ দেবের নাম শোনেন অধ্যাপক উইলিয়াম হেস্টির কাছে। একটি কবিতা পড়ানোর সময় রামকৃষ্ণ দেবের প্রসঙ্গে তুলেছিলেন হেস্টি। তারপর রামচন্দ্র দত্ত একবার নরেন্দ্রনাথকে সুরেন্দ্রনাথ মিত্রের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন , সেখানেই এসেছিলেন রামকৃষ্ণ দেব। সেই দিন রামকৃষ্ণ দেব নরেন্দ্রনাথকে একটি গান শোনাতে বলেন , নরেন্দ্রনাথের গলায় অসাধারণ গান শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ দেব। সেই দিনই তিনি নরেন্দ্রনাথকে দক্ষিণেশ্বরে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করেন। তারপরে রামকৃষ্ণ দেবের আমন্ত্রণে দুজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণেশ্বরে পদর্পণ করেছিলেন নরেন্দ্রনাথ। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে আকর্ষণ বাড়তে থাকে রামকৃষ্ণ দেবের প্রতি। তারপর ১৮৮৪ সালে যখন নরেন্দ্রনাথের পিতা বিশ্বনাথ দত্তের মৃত্যু ঘটে , তখন নরেন্দ্রনাথের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভেঙে পরে। সেই সময় তিনি চাকুরির অনুসন্ধান করেও চাকরি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে তিনি রামকৃষ্ণ দেবের সান্নিধ্যে প্রবল শান্তি অনুভব করতে থাকেন।
১৮৮৬ সালের ১৬ই আগস্ট গলায় ক্যান্সার হয়ে প্রাণ হারান রামকৃষ্ণ দেব। তারপরেই ডিসেম্বর মাসে , হুগলী জেলার আঁটপুরে যান , সেখানেই নরেন্দ্রনাথ সহ আরও আট জন সন্যাস গ্রহণ করেন। সেখানেই নরেন্দ্রনাথের নাম হয় ‘’স্বামী বিবেকানন্দ’’ । তারপর থেকেই তিনি স্বাধীনভাবেই স্থায়ী বাসস্থান ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে থাকেন। তাঁর পরিব্রাজক জীবনের সঙ্গী ছিল ভগবতগীতা , লাঠি।