রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দ

0 0
Read Time:4 Minute, 31 Second

নিউজ ডেস্ক: ১২ই জানুয়ারি দিনটা বাংলা তথা গোটা বিশ্বের কাছে এক ঐতিহাসিক দিন। স্বামী বিবেকানন্দ, এই নামটা জানেন না এমন ব্যক্তি এই পৃথিবীতে মেলা দায়। নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে একজন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রধান শিষ্য হয়ে ওঠা, একজন সাধারণ ছাত্র থেকে সন্যাসীর রূপে পাওয়া পিছনে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।

নরেন্দ্রনাথ প্রথম শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ব্যাপারে শুনেছিলেন তাঁর অধ্যাপকের কাছে।“ দ্য এক্সকারশন “ নামক কবিতা পড়ানোর সময় অধ্যাপকের মুখে প্রসঙ্গ ক্রমে উঠে আছে। তারপর অজান্তেই সুরেন্দ্রনাথ মিত্রের বাড়িতে প্রথম সাক্ষাৎ হলেও , একে অপরের সঙ্গে পরিচিতি বাড়ে দক্ষিণেশ্বরে।

দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথের প্রথম আলাপ ছিল নরেন্দ্রনাথের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এদিন নরেন্দ্রনাথ, শ্রীরামকৃষ্ণ দেবকে একটি প্রশ্ন করেছিলেন, মহাশয় আপনি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন? উত্তরে শ্রীরামকৃষ্ণ দেবে বলেছিলেন, হ্যাঁ অবশ্যই করি। তোমায় যেমন আমি আমার সামনে দেখতে পাচ্ছি , ঠিক তেমনই আমি ওনাকেও দেখতে পাই। বরং আরও স্পষ্ট ভাবে ওনাকে দেখতে পাই।

প্রথম দিকে শ্রীরামকৃষ্ণ দেবেকে মেনে নিতে এমনকি তাঁর চিন্তা ভাবনার বিরুধাচারণ করলেও পরবর্তীকালে নরেন্দ্রনাথ আকৃষ্ট হয়ে পরে শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের ব্যক্তিত্বের প্রতি । যার ফলে তিনি বারবার দক্ষিণেশ্বরে যাতায়াত শুরু করেন। ১৮৮৪ সালে নরেন্দ্রনাথের পিতার মৃত্যুর পর বাড়ির আর্থিক অবস্থা এতই ভেঙে পরে যে তাঁর আত্মীয় – স্বজনরাও বাড়ি থকে নরেন্দ্রনাথের পরিবারকে বিতাড়িত করতে চেষ্টা শুরু করে। এমন সময় তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের সান্নিধ্য লাভ করে। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ দেবেকে বলেন , ওনার পরিবারের জন্য তাঁর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে। শ্রীরামকৃষ্ণ দেবে বলেন , না আমি নয় , তুমি নিজে গিয়ে প্রার্থনা করবে।
নরেন্দ্রনাথ যখন প্রার্থনার জন্য দেবালয় উপস্থিত হত, তখন ষে প্রার্থনার পরিবর্তে জ্ঞান ও বিবেকের সাধনায় মত্ত হয়ে পরেন। এই ভাবেই তিনি ঈশ্বরের উপস্থিতি উপলব্ধি করতে শুরু করেন এবং নিজে সংসার ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।

পরবর্তীকালে যখন শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের গলায় ক্যান্সার ধরা পরে, তখন চিকিৎসার জন্য তিনি কলকাতার কাশীপুরে চলে আসেন। ওখানেই তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে সন্যাস ও গৈরিক বস্ত্র লাভ করেন। এর পরে নরেন্দ্রনাথের নেতৃত্বে সন্যাসী সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়।

শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যুর পর , ভক্ত ও অনুগামীরা শিষ্যদের সাহায্য করা বন্ধ করে দিলে, বরাহনগরে একটি ভাঙা বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে মঠ প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন স্বামী বিবেকানন্দ । সন্যাসীদের ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে বাড়ি ভাড়ার টাকা জোগাড় হত সেই সময়। তাই বরাহনগর মঠটি প্রথম রামকৃষ্ণ দেবের ভবন নামে তখন থেকেই পরিচিতি লাভ করতে থাকে।

Happy
Happy
50 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
50 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!