দাম্পত্য বিবাদ মেটাতে সালিশি সভায় তুলকালাম সংঘর্ষে জখম ৫, গ্রেপ্তার ৬
নিউজ ডেস্ক: শশুর বাড়ির পাশের জলসা দেখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ মেটাতে গ্রাম্য সালিশি সভায় তুলকালাম সংঘর্ষে মহিলাসহ গুরুতর জখম ৫, গ্রেফতার অভিযুক্ত মেয়ের পক্ষের ৬ জন।শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরিহরপাড়া থানার লোচন মাটি ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরবর্তীতে থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সংঘর্ষে জখম হওয়া সকলেই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে । ঘটনার সূত্রপাত সামান্য জালসা অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ কে কেন্দ্র করেই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪ বছর আগে নওদা থানা মধুপুর ডাঙ্গাপাড়ার মূক ও বধির সেলিনা বিবির সঙ্গে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় হরিহরপাড়া লোচন মাটি ডাঙ্গাপাড়া এলাকার লাল মোহাম্মদ শেখের। বর্তমানে তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। অভিযোগ, মূক ও বধির হওয়াই সেলিনার সঙ্গে মাঝে মধ্যেই তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের টুকিটাকি ঝামেলা লেগেই থাকত নিত্যদিন। এই পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও সম্প্রতি বৃহস্পতিবার সেলিনার শ্বশুরবাড়ির পাশের গ্রাম খলিলাবাদে একটি জালসা অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। সেক্ষেত্রে অভিযোগ স্ত্রীকে ওই জলসা অনুষ্ঠান দেখার অনুমতি না দিলে স্বামী লাল মোহাম্মদ শেখ এর সঙ্গে সেলিনার মনোমালিন্য চরমে পৌঁছায়। আর এই খবর গিয়ে কোনভাবে পৌঁছায় সেলিনার বাপের বাড়িতে। মেয়েকে জামাই ও তার বাড়ির লোকজনের জালসা দেখতে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ার ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয় বাপের বাড়ির লোকেরা। সেইমতো এদিন উভয় পরিবারের এই মনোমালিন্য দূর করতে একটি গ্রামীণ ঘরোয়া সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। অভিযোগ সেলিনার পরিবারের লোকজন দলবেঁধে বাইক ও গাড়িতে করে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওই সালিশি সভায় হাজির হয় সেলিনার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের শায়েস্তা করতে। সেখানে এই মুহুর্তের মধ্যে উভয়পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি থেকে সংঘর্ষ বেধে যায়। তারপরেই লাল মোহাম্মদ শেখ এর পরিবারের ২ মহিলাসহ ৫ জন গুরুতর ভাবে জখম হয় সেলিনার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে।তাদের তৎক্ষণাৎ তড়িঘড়ি উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় হরিহারপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এদিকে ঘটনার পরই লাল মোহাম্মদ এর বাবা আলিম উদ্দিন শেখ ছেলের স্ত্রীর শ্বশুরবাড়ি ৬ জনের নামে হরিহরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করে মূল অভিযুক্ত কাবেজুল শেখসহ বাপন সেখ ছোটন শেখ গোলাম শেখ সহ বাকিদের গ্রেপ্তার করে। ছেলের বাবা আলিম উদ্দিন শেখ বলেন,”আমার বৌমার বাড়ির লোকজন এদিন রীতিমত আমাদের বাড়িতে সালিশের নামে হামলা চালায়। এমনকি বাড়ি মেয়েদের মারধর করে তাদের কাছ থেকে গলার সোনার চেইন ছিনিয়ে পর্যন্ত নেয়। ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর সাজা চাই”।