দোল ও হোলি
তিয়াশা ঘোষ: করোনার মতো পরিস্থিতিতে যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেখানে নিষিদ্ধ হয়েছে, তারই মধ্যে থেকে বাদ গেল না দোল যাত্রা বা হলির মত উৎসবও। প্রতি বছর যেভাবে প্রতি পাড়ায় পাড়ায় প্রতি পরিবারের মধ্যে সেভাবে হয়তো এই বছর হবে না। তারই মধ্যে আবার পশ্চিমবঙ্গে চলছে নির্বাচনী পালা। গতকাল হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রথম দফার নির্বাচন। সমস্ত কিছুকে পেছনে ফেলে এই ঐতিহাসিক উৎসব দোল বা হোলি তার আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ইতিহাস অবলম্বনে আসুন জেনে নেওয়া যাক, দোল হোলি শুভারম্ভ কিভাবে হয়েছে।
দোলযাত্রা মূলত পালিত হয় রাধা ও কৃষ্ণের প্রেমের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে। আর হোলি পালিত হয় নৃসিংহ অবতারের হাতে হিরণ্যকশিপু বধ হওয়ার যে পৌরাণিক কাহিনি, তার ওপর ভিত্তি করেই। এখানে শ্রীকৃষ্ণ এবং নৃসিংহ অবতার উভয়ই ভগবান বিষ্ণুর অবতার। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা রাতের পরের দিন দোল উত্সব পালন করা হয়ে থাকে। মনে করা হয় এদিনেই রাধা ও তাঁর সখীরা দল বেঁধে রং খেলায় মেতে ছিলেন। সুগন্ধি ফুলের কুড়ি থেকে প্রাপ্ত রং তাঁর মুখে মাখিয়ে দিয়েছিলেন কানাইলাল কৃষ্ণ। সেদিনই কৃষ্ণ রাধাকে তার প্রেম নিবেদন করেছিলেন বলে মনে করা হয়।
অন্যদিকে, পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। সেই কারণে প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে আগুনে নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেন। বিষ্ণুর কৃপায় আগুন প্রহ্লাদকে স্পর্শ করতে না পারলেও সেই আগুনে পুড়ে মারা যান হোলিকা। তার হোলি হল অশুভ শক্তির পরাজয় ও শুভ শক্তির জয়ের প্রতীক। তাই হোলির আগের দিন হোলিকা দহন পালন করা হয়। দোলের আগের দিন বাঙালিরাও ন্যাড়া পোড়া বা বুড়ির ঘর পুড়িয়ে পালন করা হয়।