প্রকৃতির তান্ডব লীলা
নিউজ ডেস্ক: ইয়াসের ভয়াবহ রূপের আশঙ্কা আগে থেকেই করেছিল মৌসম ভবন। তার সঙ্গে ভরা কোটাল এবং চন্দ্রগ্রহণের যোগ বাড়িয়ে তুলেছে ইয়াসের শক্তি। যা তছনছ করে দিয়েছে বাংলার বেশ কয়েকটি জেলার সঙ্গে উড়িষ্যা উপকূলবর্তী অঞ্চলকে। বুধবার সকাল ৯.১৫ নাগাদ উড়িষ্যা ধামরা ও বালেশ্বর উপকূলের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ১৩০ – ১৫০ কিমি গতিবেগে আছড়ে পড়ল ইয়াস। যা দীঘার সমুদ্রের পাশেই বলা যায়। যার জেরে দীঘার সমুদ্র এক্কেবারে উত্তাল হয়ে ওঠে। দীঘার সমুদ্রের ঢেউ প্রায় ৩০ ফুটের উপর দিয়ে যাচ্ছিল । ভেঙে পড়ে বিশ্ব বাংলার দীঘার উপকূলে সৌন্দর্য শহর দিঘা। বিচের মধ্যে ফেলা বোল্ডার গুলোকে তুলে এনে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেছে ইয়াস। এমনই তান্ডব ঘটিয়েছে দীঘায়। দীঘা সংলগ্ন মন্দারমনি, তাজপুর, উদয়পুর সমুদ্র সৈকত যেখানে কিনা সমুদ্রের জলের ঢেউ এর দেখা মেলে না, বলেই পরিচিত। সেখানে মানুষ কার্যত লক্ষ্য করেছে তান্ডব লীলা। গ্রামে গ্রামে প্রবল ঢেউ গিয়ে তছনছ করে দিয়েছে মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই গুলো।
প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এখনকার প্রায় ১৫ টি অঞ্চল জলের নিচে বলে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওদিকে, জলের নিচে চলে যায় কপিল মুনি আশ্রম তথা গঙ্গা সাগর। বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ে ফ্রেজারগঞ্জ এ। যার ফলে গ্রামবাসীদের আগে থেকেই উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সাগর, পাথর প্রতিমা, নামখানার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঁধ ভেঙে গ্রামে প্রবলবেগে জল ঢুকে গিয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর জল কাকদ্বীপের একাধিক গ্রামে ঢুকতে শুরু করে। গ্রামবাসীদের উদ্যোগে বহু শিশুকে উদ্ধার করে এনে নিরাপদ স্কুল বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সন্দেশখালি ও গোসাবার একাধিক গ্রামে প্রায় এক বুক সমান জল জমে গিয়েছে। মাটি থেকে ৪ – ৫ ফুট উপরে জলস্তর ওখানে এখানে অবস্থান করছে।
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর যেখানে কিনা আছড়ে পড়ার করার কথা ছিল ইয়াসের। রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল, সেখানে আজ ১০ লক্ষের বেশি ত্রাণ পাঠানো হয়েছে নবান্ন থেকে। পূর্ব মেদিনীপুরের ৫১ টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে ইয়াসের তাণ্ডবে।
কবে বাড়ি ফিরবেন এই ঘরছাড়া মানুষগুলো? কবে তারা শান্তিতে আবার নিরাপদ ভাবে ঘুমোতে পারবে না রাতের ঘুম! যা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।