জীবন যুদ্ধ শেষ উড়ন্ত শিখ এর
নিউজ ডেস্ক: গতকাল অর্থাৎ ১৮/৬/২০২১ নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন উড়ন্ত শিখ। জীবনের দৌড় তিনি গতকাল রাত সাড়ে এগারোটায়তেই শেষ করে দিয়েছিলেন। তার নাম মিলখা সিং। ভারতীয় সেনাতে কর্মরত অবস্থাতেই তিনি খেলার জগতে প্রবেশ করেন। তিনি প্রথম যিনি অ্যাথলেটিক এ ৪০০ মিটার দৌড়ে সোনা এনেছিলেন। যার মধ্যে এশিয়ান গেমস এবং কমনওয়েলথ গেমস এও তিনি স্বর্ণপদক এনেছিলেন। দেশের জন্য ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করে সোনার মেডেল জিতে ছিলেন মিলখা সিং। এরপর দেশের হয়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি অলিম্পিক অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
দেশ ভাগ হওয়ার আগে পাঞ্জাবের ঠিক যে অংশটি পাকিস্তানে রয়েছে সেখানে তার বাড়ি ছিল। সেখানে তার গোটা পরিবারকে মেরে ফেলা হয়েছিল। সেখান থেকে তিনি পালিয়ে এসেছিলেন ভারতে। তারপর থেকে তিনি ভারতে থাকতেন। যেতে চাননি নিজের পুরনো জায়গায়। ১৯২৯, ২০ নভেম্বর ব্রিটিশ ইন্ডিয়া গোবিন্দপুরা, পাঞ্জাবে তার জন্ম হয়েছিল। ১৮ জুন ২০২১, ৯১ বছর বয়সে ভারতের চণ্ডীগড়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। করোনা তার জীবন গ্রাস করেছে। তার মৃত্যুর ঠিক এক সপ্তাহ আগেই তার স্ত্রী নির্মল কৌর মারা যান।
১৯৬০ সালে পাকিস্তানে তার ইতিহাস তৈরি করার আগে বিদেশের মাটিতে ভারতীয় হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন মিলখা সিং। ২০০ মিটার এবং ৪০০ মিটার দৌড়ে তিনি প্রথম, যিনি সোনার পদক জিতে ছিলেন। এরপর ভারতের মাটিতে সোনার পদক জিতেছেন। তারপর ১৯৬০ সালে জহরলাল নেহেরুর আবেদনে পাকিস্তানে যান মিলখা সিং। যেখানে তিনি আব্দুল খালিদ এর বিপরীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার অসম্ভব জেদ এবং দৌড় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন পাকিস্তানের জেনারেল আইয়ুব খান। যিনি মিলখা সিংকে বলেছিলেন তিনি “উড়ন্ত শিখ” অর্থাৎ ফ্লাইং শিখ।
গোটা জীবনে বহু পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন মিলখা সিং। পদ্মশ্রী, অর্জুনা, ইন্ডিয়াস ফোর্থ হায়েস্ট সিভিলিয়ান আওয়ার্ড সহ আরো অনেক। মিলখা সিং তার গোটা জীবনে যত পুরস্কার পেয়েছেন, যত স্বর্ণ পদক পেয়েছেন সবকিছু তিনি দেশের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন। যা একটা সময় জহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম, নিউ দিল্লিতে ছিল। পরে সেটিকে স্পোর্টস মিউজিয়াম পাতিয়ালাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।