রেললাইন পার হতে গিয়ে মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেবে না ভারতীয় রেল
নিউজ ডেস্ক বিভিন্ন সময়ে রেল লাইন পার হতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়। অনেক সময়ই এই অপ্রীতিকর মৃত্যর কারণে ভারতীয় রেলের দিকে আঙুল ওঠে, এমনকী ক্ষতিপূরণের দাবিও করেন অনেকে। এই বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণের কথা জানাল তেলঙ্গানা হাইকোর্ট। একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছে, রেলেওয়ে আইনের ১২৪ (এ) ধারা অনুযায়ী রেল লাইন পারাপার হতে গিয়ে নিজের গাফলতিতে যদি কোনও যাত্রীর মৃত্যু হয়, তবে ভারতীয় রেল কোনওভাবে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে না। বিচারপতি জি. অনুপমা চক্রবর্তী বলেন, যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে একমাত্র তবেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ২০০৮ সালের মে মাসের ৬ তারিখ একটি মৃত মহিলা তাঁর পরিবারের সঙ্গে হাওড়া-তিরুপতি এক্সপ্রেসে চেপে কান্ডুকুরু যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে তিনি ট্রেন থেকে বেয়ে রেললাইনে নেমে পড়েন এবং রেললাইন থেকে প্ল্যাটফর্মে ওঠার চেষ্টা করেন। শাড়ি লাইনে আটকে যাওয়ায় তিনি প্ল্যাটফর্মে উঠতে পারেননি এবং নবজিন এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ওই মহিলা প্রাণ হারিয়েছিলেন। মহিলার মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে রেলওয়ের কাছে ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছিল। সেকেন্দ্রাবাদের রেলওয়ে ক্লেম ট্রাইবুনাল আবেদন খারিজ করে দেয়। রেলের আইনজীবী দাবি করেন, মহিলার গাফিলতির কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাই এটি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা নয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই ঘটনায় মৃত মহিলা দুর্ঘটনাবশত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মারা যাননি, তাই কোনোভাবে এটা অপ্রীতিকর ঘটনা নয়। মৃত মহিলার ছেলে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন যে গাফিলতির কারণে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয়ত রেললাইন পার হওয়ার সময় ওই মহিলা ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার করেননি বরং রেললাইন পারাপার হয়েছে, যা ফৌজদারি অপরাধের সামিল।
এমনকি আবেদনকারীর কাছে এমন কোনও প্রমাণ ছিল না, যা থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে মৃতার শাড়ি রেললাইনে আটকে গিয়েছিল। ১২৪ (এ) ধারা অনুযায়ী রেল একমাত্র তাদেরই ক্ষতিপূরণ দেবে যাদের অপ্রীতিকর কোনও ঘটনায় মৃত্যু হবে। তাই আদালতের মতে এই মৃত্যুর ঘটনা ‘অপ্রীতিকর ঘটনা’ নয়। তাই ক্ষতিপূরণের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।