পারিবারিক অশান্তি চাপা দিতেই খুনের তত্ত্ব? উঠছে প্রশ্ন

0 0
Read Time:5 Minute, 31 Second

নিউজ ডেস্ক পারিবারিক অশান্তির তথ্য চাপা দিতেই খুনের অভিযোগ তোলে পরিবার। এই অভিযোগ তুলেছেন চিত্‍পুরের বাসিন্দারই। তাঁদের মতে, চিত্‍পুরের ঘোষবাগানের চৌরাসিয়াদের পরিবারে বহুদিন ধরেই চলছিল সমস্যা। বেশ কিছু টাকা খোয়ানোর ফলে কয়েকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন অর্জুন। অর্থনেতিক ও পারিবারিক সমস্যার চাপ এক সঙ্গে মানতে পারেননি ২৬ বছরের যুবক। তার ফলেই হয়ত এই আত্মঘাতী ।

এই তথ্যগুলি পুলিশের কানেও এসেছে। তথ্যগুলি যাচাই করতে বুধবার চিত্‍পুর থানায় বিশেষ ‘সেট’এর সদস্যরা অর্জুন চৌরাসিয়ার দুই দাদা আনন্দ ও অমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অন্য একটি টিম ঘোষবাগান লেনের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে অর্জুনের মা, বউদি ও খুড়তুতো বোনকে।

পারিবারিক ঝগড়া যে হয়েছিল, সেই তথ্যও উঠে এসেছে। অর্জুনের অন্তত ৩০ জন বন্ধু ও এলাকার বাসিন্দার বক্তব্য গ্রহণ করেছে ‘সেট’। কেউ তাঁকে ওই পরিত্যক্ত ঘরে ঢুকতে দেখেননি। কিন্তু এমন একজন বন্ধুর হদিশ মিলেছে, যাঁকে অর্জুন গত বৃহস্পতিবার সন্ধেয় অফিস থেকে বাড়িতে ফেরার আগেই হতাশার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ওই বন্ধুটির দাবি, তিনি তখনও বুঝতে পারেননি যে, আত্মহত্যার মতো কাজ করবে অজুর্ন।

২৫ বছর আগে অর্জুনের বাবা রাজকিশোর চৌরাসিয়া বিষপান করে আত্মঘাতী হন। তখন অর্জুনের বয়স মাত্র ৬ মাস। প্রচণ্ড মদ্যপান করতেন পরিবহণের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর কয়েকজন বন্ধু জানান, মদ্যপানের পর সাংসারিক অশান্তির জেরেই বিষ রাজকিশোর বিষ খেয়েছিলেন

তদন্তের স্বার্থে ‘সেট’ মৃতের জামা, প্যান্ট, গলার ফাঁসের কাপড়, ভিসেরা চেয়ে পাঠালে তা দিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগে এবার সেনা হাসপাতালের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য। বুধবার আদালতের উল্লেখ পর্বে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যের কৌঁসুলি অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেগুলি হায়দরাবাদে পাঠাতে চায়।

এদিকে, এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইনে গেম খেলার ফলে আর্থিক ক্ষতি হয় অর্জুন চৌরাসিয়ার। তিনি বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা ফেরত দিতে পারতেন না। দাদা আনন্দ চৌরাসিয়া যে গেঞ্জি কারখানার সুপারভাইজার, সেই কারখানায় কাজ করেই অর্জুন ১১ হাজার ১০০ টাকা বেতন পেতেন। বাড়িতে দিতে হত দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। পাওনাদাররা চাপ দিতেন। সম্প্রতি কুসঙ্গেও পড়েছিলেন। পরিবারের লোকেরা বেরিয়ে আসতে বলতেন। এক বান্ধবীর সঙ্গে পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিল।
তার মধ্যেই পরিবারের দুই সদস্য পারিবারিক সূত্রে বেশ কিছু টাকা পান। পরিবারের অন্যরা সেই টাকার ভাগ চান। আলাদা ফ্ল্যাট কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকে পারিবারিক অশান্তি যে চরমে ওঠে, তা জানতে পারেন প্রতিবেশীরা।
এর আগেও পরিবারিক অশান্তির জেরে অর্জুন বাড়ি ছেড়ে চলে যান বলেই খবর। গত বৃহস্পতিবার অর্জুন কারখানা থেকে ফেরার পরও কিছু খাননি। বরং কিছু গোলমালও হয়। নিজের গামছা নিয়ে বের হওয়ার পরও টালা ব্রিজ পেরিয়ে কয়েকটি জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। এরপর আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েই বেশি রাতে রেল কলোনিতে আসেন বলেই অভিমত পুলিশের। এই পারিবারিক সমস্যার ব্যাপারে পরিবারের লোকেদের ‘সেট’ প্রশ্নও করে। তবে তাঁর পেটে যে ১০ মিলিগ্রাম কালো রঙের তরলের মিলেছে, সেটি কী বস্তু, তা ভিসেরা রিপোর্টের পরই বোঝা যাবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!