পুরুষ সেজে মেয়েকে মানুষ করতে মায়ের আশ্চর্য লড়াই
নিউজ ডেস্ক যে জীবন সুন্দর, সেই জীবনই সময়ে সময়ে দাঁত-নখ বার করা ভয়ংকর। তরুণী বিধবা মা আর সদ্যজাত কন্যাসন্তানের সংসারের দিকে কুনজর ছিল সমাজের ‘কাক-শকুন-চিলে’র। সেই লড়াই জিততে, মেয়ের ও নিজের সুরক্ষায় আশ্চর্য কৌশল নিয়েছিলেন মা। একজন মা-ই হয়তো এমনটা পারেন! মেয়েকে মানুষ করতে পুরুষের সেজে কাটিয়ে দিলেন তিন দশকের বেশি সময়। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, তামিলনাড়ুর এই ঘটনা। যারপর শোরগোল পড়ে গিয়েছে বর্তমানে ৫৭ বছরের প্রৌঢ়া পেচিয়াম্মলকে নিয়ে।
গল্পের যখন শুরু, তখন কুড়ি বছরের তরুণী পেচিয়াম্মল। থুথুকুডি জেলার কাতুনায়াক্কানপট্টি গ্রামের বাসিন্দা। সদ্য বিয়ে হয়েছে। বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় মারা গেলেন স্বামী। কিছুদিন পর পেচিয়াম্মল বুঝতে পারেন তিনি গর্ভবতী। সময় মতো ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপরেই সমস্যার সূত্রপাত। নিজের ও সন্তানের ভরণপোষণে কাজ খুঁজতে হয় তরুণীকে। কিন্তু কাজের জায়গায় হেনস্তার স্বীকার হন বারবার। হেনস্তার কারণ অসহায় বিধবা তরুণী! যার পাশে কেউ নেই।
এরপরই বাধ্য হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেন পেচিয়াম্মল। দ্বিতীয় বিয়ে না করে একা মেয়েকে মানুষ করতে পুরুষের ছদ্মবেশ গ্রহণ করেন। বদলে ফেলেন নাম। পেচিয়াম্মল হয়ে যান মুথু। লম্বা চুল কেটে ফেলেন। স্থানীয় ছেলেদের মতো লুঙ্গি আর শার্ট পরা শুরু করেন। এবার কাজ পেতে অসুবিধা হয়নি। কাজের জায়গায় হেনস্তার তো কথাই নেই। এভাবেই চায়ের দোকানের কর্মী থেকে হোটেল ‘বয়ে’র কাজ, বহু জায়াগায় কাজ করে নিজের ও সন্তানের সংসার টানেন পেচিয়াম্মল ওরফে মুথু। প্রৌঢ়া জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে বিষয়টি ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যায়। তাঁকে সবাই ‘আন্নাচি’ বলে ডাকতেও শুরু করে। অচেনা পুরুষকে এই নামেই সম্বোধন করেন স্থানীয়রা।