‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে।’
শাশ্বতী চ্যাটার্জি: আজ আষাঢ় মাসের প্রথম দিন – ১ আষাঢ়।আবেগ তাড়িত বাঙালির কাছে একটা বিশেষ দিন।প্রবল গরমের পরে প্রকৃতি সেজে ওঠে নতুন রূপে-রসে আর নতুন সাজে।রবীন্দ্রনাথ ‘আষাঢ়’ কবিতায় লিখলেন – “নীলনবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহিরে।” আর আমাদের সংস্কৃত মহাকবি কালিদাসের ‘মেঘদূত’ তো বিখ্যাত হয়ে গেল,’আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে ‘ লাইন দিয়ে।মহাকবি জয় করলেন,সমস্ত সংবেদনশীল প্রেমিক হৃদয়কে।
‘মেঘদূত’এর কাহিনী সংক্ষিপ্ত।অলকাপুরিতে থাকেন ধনের দেবতা কুবের।তাঁর ওখানেই কাজ করেন সরলমনা যক্ষ।যক্ষের নতুন বিয়ে হয়েছে।ফলে সে মাঝে মাঝেই কাজে আনমনা হয়ে যাচ্ছে।ক্ষুণ্ন হয়ে দেবতা কুবের শাস্তি স্বরূপ যক্ষকে এক বছরের জন্য নির্বাসিত করেন ঘন জঙ্গলে ঘেরা রামগিরি পাহাড়ে।যক্ষ দশ মাস ধরে সেই অরণ্যসঙ্কুল বনে ঘুরে বেড়ায়।কিন্তু আষাঢ় মাসের প্রথম দিন যক্ষকে উত্তরা মেঘ স্মরণ করিয়ে দেয় আষাঢ়স্য প্রথম দিবস।ওর মনে পড়ে দশ মাস অতিক্রান্ত।আর মাত্র দু’মাস বাকি।কিন্তু ওর প্রিয়া ঠিক মতো নিরাপদে অলকাপুরিতে আছে তো?কিন্তু ওর নিজের খবর কি করে ওর প্রিয়ার কাছে পাঠাবে?ঠিক তখনই ওর মাথার উপর দিয়ে এক খন্ড কালো মেঘ উড়ে যাচ্ছে অলকাপুরীর দিকে।
প্রেমিক যক্ষ তখন মেঘকে ডেকে বলে,ওর খবর ওর প্রিয়ার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।কাতর যক্ষকে দেখে আকাশের কালো মেঘ রাজি হয় দূত হতে আর সৃষ্টি হয় পৃথিবীর অন্যতম প্রেমের কাব্য ‘মেঘদূত’।
তাই পৃথিবীর চিরন্তন প্রেমিক মন আজ উদ্বেলিত হয়ে ওঠে তার প্রেমিক হৃদয়ের কম্পনে।আর মনে মনে বলে ওঠে ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’।