মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণ রোধে একাধিক সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
নিউজ ডেস্ক::ইতিমধ্যে কেরল থেকে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত দ্বিতীয় ব্যক্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে।
ভারতে ফের মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ার পরেই আরও সতর্ক হয়ে পড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বিদেশ থেকে ফেরা যাত্রীদের বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কেরলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠিয়েছে। গত দুই মাস আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তবে, গত সপ্তাহে ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ পাওয়া যায়। বিশ্বে ৬০টির বেশি দেশে মাঙ্কি পক্স ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৬,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের হদিশ পাওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রক সতর্কতা হিসেবে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিশেষ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শরীরে গুটি উঠলেই তা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিভৃতবাসের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শরীরে গুটি উঠলেই নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ট সম্পর্কে এলে পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের ১৫টি পরীক্ষাগারে মাঙ্কি পক্সের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও দেশবাসীকে মৃত বা বন্য প্রাণীর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণের হার অনেকটা কম। তাই মাঙ্কি পক্সের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও কম। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মূলত মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তদের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক করলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটালেও সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীরে কোনও গুটি দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। চিকেন পক্সের বদলে তা মাঙ্কি পক্স হতে পারে।
মাঙ্কি পক্সের সেই অর্থে কোনও চিকিৎসা নেই। মাঙ্কি পক্সের সঙ্গে গুটি বসন্তের অনেকটাই মিল। উপসর্গ প্রায় এক। সেই কারণে মাঙ্কি পক্সে চিকিৎসার জন্য গুটিবসন্তের চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কয়েক দশক ধরেই আফ্রিকায় মাঙ্কি পক্সের প্রকোপ চলছে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে মাঙ্কি পক্সের মৃত্যুর হারও বেশি। তবে দুই মাস আগে আফ্রিকা ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছয় হাজারের বেশি মানুষ মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত হলেও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সংক্রমণের হারের পাশাপাশি মৃত্যুর হার কম। মাঙ্কি পক্স নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।
কানাডা, ব্রিটেন, আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রিং ভ্যাকসিনেশন নামের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঙ্কি পক্সের বিরুদ্ধে এই টিকাকরণ বেশ কার্যকর বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, সকলের এই টিকার কোনও প্রয়োজন নেই। মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা কোনও ব্যক্তি এই ভ্যাকসিন নিতে পারেন। আমেরিকার বেশ কয়েকটি শহরে জোর কদমে মাঙ্কি পক্সের টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। নিউ ইয়র্ক শহরে এখনও পর্যন্ত ২১ হাজার নাগরিক মাঙ্কি পক্সের টিকা নিয়েছেন।