ভয়াবহ স্মৃতি এখনো মাথাচারা দিয়ে উঠছে বিপ্লবের
নিউজ ডেস্ক:: এখনও দগদগে স্মৃতি । দু’ চোখের পাতা এক করলে শিউরে ওঠে শরীর ৷ ভয়াবহ রাতে জ্ঞান ফেরার পরে অন্ধকারে সেই চিৎকার আর ১০ জন বন্ধুর নিথর শরীর পরে থাকতে দেখেছিল শীতলকুচির বিপ্লব বর্মন। হাতে পায়ে এখনও ক্ষত দাগ নিয়ে ভয়াবহ স্মৃতির ঘোর থেকে বের হতে পারেননি৷ জলপাইগুড়ি হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন নিজের বাড়িতে৷
রবিবার রাতে বিপ্লব রওনা হয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে শীতলকুচি থেকে জল্পেশ মন্দিরে ৷ তাঁরা প্রায় পনেরো জন যাবেন প্রথমদিকে ঠিক হলেও পরে শিবের মাথায় জল ঢালতে রওনা হয়েছিলেন গ্রামের প্রায় ৩০ জন। প্রত্যেকের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে৷ বিপ্লব এ বছরই প্রথমবার জল্পেশ যাত্রায় যাবেন বলে বন্ধুদের সঙ্গে রওনা হয়েছিলেন । তবে মাঝপথেই থমকে গেল সফর। ভয়াবহ সেই রাতের অন্ধকার নেমে এল দশটি পরিবারের জীবনে।
কী হয়েছিল সেই রাতে? পুণ্যার্থীদের ভিড়ে ঠাসা পিকআপভ্যানে চলছিল ভোলেবাবার ভক্তিমূলক গান ও নাচ৷ মেখলিগঞ্জের চ্যাংড়াবান্ধা ধরলা সেতুর কাছে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে ত্রিপল দিয়ে জেনারেটর ও ডিজে সাউন্ড বক্স ঢেকেছিলেন । বৃষ্টি কমলে ফের তারা ত্রিপল সরিয়ে নাচতেও থাকেন । কেউ শুয়ে বসে ছিলেন পিকআপভ্যানে ৷ সে সময় বৈদ্যুতিক শক লাগার মতো অনুভব করেন ।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বিপ্লব জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন৷ জ্ঞান ফিরলে দেখেন তাঁর অনেক বন্ধু ও অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন । গাড়ির চালক গাড়ি থামিয়ে জেনারেটরটি বন্ধ করে দেন। এর পর যখন সবটা স্পষ্ট হয় তখন তিনি জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি। জানতে পারেন সঙ্গে থাকা দশজন বন্ধুর প্রাণ চলে গিয়েছে এই ঘটনায়। এখনও সেই ভয়াবহ স্মৃতি দগদগে। দগদগে শরীরে ও পায়ে ক্ষত দাগ। কী করে এই দাগ? হয়তো ইলেকট্রিক শক লেগে। আপাতত হাঁটাচলা বন্ধ বিপ্লবের। বিপ্লব জানান তিনি যে বেঁচে আছেন, এই তো অনেক। কখনও ভুলবেন না সেই রাত৷