স্যাট – এর সাসপেন্স
নিউজ ডেস্ক::শনিবার সন্ধ্যায় টানটান উত্তেজনা কলকাতার জাদুঘরে । বাইরে পুলিশ, ভিতরে অস্ত্র নিয়ে CISF জওয়ান। পুলিশের কাছে খবর আসতেই ময়দানে নেমে পড়েন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ফোর্স। ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল পৌঁছাতেই শুরু হয় ‘অপারেশন মোজো’।
পুলিশের কাছে খবর আসে একজন জওয়ান হাতে AK-47 নিয়ে যাদুঘরের CISF ব্যারাক চত্বরে বন্দুক হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ বিভিন্নভাবে নাগালে আনতে চাইলেও ব্যর্থ হয় । তারপরে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ফোর্স বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরে প্রবেশ করে জাদুঘরের সেই ঘটনাস্থলে। কলকাতা পুলিশের একাধিক আইপিএস পদমর্যাদার অফিসারও পরে নেন বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। এই প্রস্তুতির মধ্যেই কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল এসে পৌঁছন ।
মাইকিং করে বারবার পুলিশের তরফে জানানো হয় তাদের কাছে ধরা দিতে ওই জওয়ানকে।বেশ কিছু সময় পরে পুলিশের তরফে ফের বলা হয়, “হেড কনস্টেবল অক্ষয় কুমার মিশ্র, আপনার সমস্ত কথা শোনা হবে, সমস্যা সমাধানের জন্য হাজির হয়েছে পুলিশ।’
প্রায় এক ঘণ্টা টানটান এই নাটকীয় মুহূর্তের মধ্যে জওয়ানের তরফে শর্ত দেওয়া হয় অস্ত্র ছাড়া সে কথা বলবে। ‘অপারেশন মোজো’র নেতৃত্বে ছিলেন ডেপুটি কমিশনার রুপেশ কুমার। জওয়ানের এই শর্ততে রাজি হয়ে জওয়ানের দিকে এগিয়ে যান অফিসাররা ।
অন্যদিকে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ফোর্স নজর রাখছিল প্রতি মুহূর্তেরর গতিবিধি, একটু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই তাদের অপারেশন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করে। অস্ত্র ছাড়া পুলিশ গিয়ে তার কাছে এই হঠাৎ করে গুলি চালানোর ঘটনা জানাতে চান। পুলিশকে সে জানিয়ে দেন শুধুমাত্র ডিউটি সমস্যার জন্য এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। ছুটি না দেবার জন্যই এই পরিস্থিতি। পনেরো রাউন্ড গুলি চলার পরে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরে মাইকিং-এ বন্ধুর মত আচরণ কাজে এল পুলিশের। সি ফ্যাক্টর অর্থাৎ ‘কনফিডেন্স’ তৈরি করেই শেষপর্যন্ত পুলিশ হাতে পেল অভিযুক্ত জওয়ানকে।
এই অপারেশনের মধ্যেই আহত দুই জওয়ানকে অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্য নিয়ে পাঠানো হয় এসএসকেএম এ। যদিও চালকের ভয় ছিল সেখানেও। ফের গুলি যদি চলে? তার মধ্যে পুলিশ নিরাপত্তায় উদ্ধার করা হয় আহত দুই জওয়ানকে। তার মধ্যে হেড কনস্টেবলের দায়িত্বে থাকা একটি আলমারির চাবিও নিয়ে নেয় পুলিশ। ওই আলমারিতে প্রচুর বন্দুক ও গুলি মজুত থাকার জন্য পুলিশের কাছে ওই চাবি উদ্ধার করা ছিল আর একটি বড় কাজ। ধৃত জওয়ান অক্ষয় কুমার মিশ্রাকে ঘটনাস্থল থেকে নিউ মার্কেট থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে লালবাজার নিয়ে যায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। অপারেশন মোজোতে শনিবার ছিল টানটান উত্তেজনা। যা সিনেমার চিত্রনাট্যের তুলনায় কম নয় ।