১০৪ বছরের এই দোকানের সঙ্গে রয়েছে নেতাজির নিবিড় যোগ

0 0
Read Time:4 Minute, 10 Second

নিউজ ডেস্ক ::২৩ জানুয়ারি সকাল থেকেই ১৫৮ বিধান সরণি ঠিকানার বিখ্যাত তেলেভাজার দোকান লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ অ্যান্ড সন্সে লাইন পড়ে যায়।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে বহু বছর ধরেই এখানে বিনামূল্যে চপ বিলি হয়। ১০০ বছরের পুরনো এই তেলেভাজার দোকান তেলেভাজা-রসিক বাঙালির অন্যতম ঠিকানা। তাই স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে যে এই দোকানের নিবিড় যোগ রয়েছে তা বলাই যায়।

১৯১৮ সালে একটি ছোট্ট ঝুপড়ির আকারে এই তেলেভাজার দোকান তৈরি করেছিলেন বর্তমান দোকানের মালিকের দাদু কেদু সাউ। প্রায়ই নাকি নেতাজির কাছ থেকে চপ-মুড়ি পাঠানোর অর্ডার পেতেন তিনি। স্বদেশি আমলে সভা-সমিতি করতে গিয়ে বহু সময় সুভাষচন্দ্র এই দোকানের তেলেভাজা খেয়েছিলেন। আপাদমস্তক নেতাজিভক্ত কেদু সাউয়ের নির্দেশ ছিল, সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে কেউ তেলেভাজা খেতে এলে তাঁর কাছ থেকে পয়সা নেওয়া যাবে না। সেই থেকে আজও নেতাজির জন্মদিনে উত্তর কলকাতার এই তেলেভাজার দোকানে ছোটদের জন্য দুটো করে এবং পরিবার প্রতি চারটে তেলেভাজা বরাদ্দ থাকে বিনামূল্যে।

বেথুন, স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিকেলে বেরিয়ে শ্যামবাজারের দিকে হাঁটতে হাঁটতে হোক, স্টার থিয়েটারে সিনেমা বা নাটক দেখে বেরনো, কিংবা হাতিবাগানে নিছক শপিংয়ের জন্য বেরিয়ে এসে লক্ষ্মীনারায়ণ সাউয়ের দোকানের তেলেভাজা চেখে দেখা অনেকেরই প্রায় রোজকার রুটিন। আলুর চপ, পেঁয়াজি, নারকেলের চপ, আমের চপ, ফুলুরি, বেগুনি, ফুলকপি, মোচা, পনির, ভেজিটেবল, ক্যাপসিকামের মতো হরেক রকমের চপ তৈরি হয় এই দোকানে। পাশাপাশি, লক্ষ্মীনারায়ণের বড় প্যাকেটে চানাচুর, ঝুরিভাজা, চিঁড়েভাজারও নির্দিষ্ট ক্রেতা আছে।

বিকেলে চপ-মুড়ি-চায়ের সঙ্গে পুরনো কলকাতায় আড্ডাপ্রিয় বাঙালির অন্যতম টান তাই ১৫৮ বিধান সরণীর লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ অ্যান্ড সন্স। হরেকরকম অত্যাধুনিক খাওয়ারের সঙ্গে আজও সমানে পাল্লা দিয়ে চলেছে আদি ও অকৃত্রিম তেলেভাজা।তেলেভাজার কদর কিন্তু বিন্দুমাত্র কমেনি।মুড়ি-তেলেভাজা দেখলে জিভে জল আসে আজও।

জনশ্রুতি আছে স্বদেশী করা বিপ্লবীদের গোপন খবর আদানপ্রদান হ’ত এখান থেকে। কথিত আছে লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ নিজেও যুক্ত ছিলেন বিপ্লবীদের সঙ্গে।বিপ্লবীদের গোপন ডেরায় গুপ্ত সমিতির বৈঠকে তেলেভাজা যেত এই দোকান থেকেই। স্বয়ং নেতাজি এই দোকানের তেলেভাজা খেয়েছিলেন। তাই এখনও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনে বিনামূল্যে বহু মানুষকে তেলেভাজা খাওয়ানো হয় এই দোকানে।রান্নার উপকরণ নিয়ে আজও সমঝোতা করেনি এই লব্ধপ্রতিষ্ঠ দোকানটি।এই দোকানে একবার যাওয়া মানে ইতিহাস ছুঁয়ে আসা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!