অধীর চৌধুরী কি ফিরে পাবেন ‘গড়’?
নিউজ ডেস্ক::মুর্শিদাবাদে বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় অধীর-গড়ে পরিণত হয়েছিল। তাঁকে বলা হত মুর্শিদাবাদের রবীন হুড। নবাব-গড়ে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। কিন্তু ২০২১-এ অধীরের ম্যাজিক কাজ করেনি। তাই মুর্শিদাবাদে শেষ শিখাটিও নিভে যায় কংগ্রেসের। বঙ্গের বিধানসভায় লজ্জার রেকর্ড গড়ে কংগ্রেস অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে।
২০২১-এর বিধানসভা ভোটের পর সামনের বছরের শুরুতেই বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরই ২০২৪-এর লোকসভা। তার আগে কি মুর্শিদাবাদে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কংগ্রেস? ফের অধীর-ম্যাজিক দেখা যাবে নবাবের জেলায়। নাকি কংগ্রেসকে ব্যর্ত মনোরথ হয়েই ফিরে আসতে হবে। কামব্যাকের লক্ষ্যে সন্তর্পণে নীল নকশা তৈরি করে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
পদে পদে দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি নাজেহাল অন্তর্দ্বন্দ্বে। এই অবস্থায় কংগ্রেস ফিরে আসার রাস্তা তৈরি করছে। ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসে যোগদানের হিড়িক পড়েছে। সম্প্রতি ভগবানগোলায় ১০০, বড়ঞা ১৬০-সহ জেলাজুড়ে প্রায় দেড় হাজার সমর্থক কংগ্রেসের হাত ধরেছে।
একুশের নির্বাচনে অধীর চৌধুরী তথা কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। মুর্শিদাবাদে মোট ২২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ২০টিতে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। বাকি দুটি কেন্দ্রে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেস পেয়েছিল শূন্য। এই অবস্থায় কংগ্রেস লড়াই শুরু করেছে। লড়াই শুরু করেছে ফিরে আসার। লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আর লক্ষ্য ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন।
২০১১ সালে বাংলায় পরিবর্তন আসার পর ২০১৬ সাল পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। কিন্তু ২০১৬-র পর থেকেই কংগ্রেসের ভিত নড়তে শুরু করে। ক্ষয় রোগ ধরে যায় কংগ্রেসের। তারপর ২০১৮-র পঞ্চায়েত এবং ২০১৯-এর লোকসভাতেও তার প্রভাব পড়ে। তবু হাওয়ার বিরুদ্ধে লড়ে একা অধীর বহরমপুর থেকে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১-এ কংগ্রেস এই জেলায় নেমে আসে শূন্যে।
এখন থেকেই কংগ্রেস মুর্শিদাবাদে পঞ্চায়েত নির্বাচনের লক্ষ্যে শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। গত দু-মাসে জেলায় ১৭টি চিন্তন শিবির করেছেন অধীর চৌধুরী। ধীরে ধীরে শক্তি বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কংগ্রেস। সম্প্রতি লালগোলার একটি পঞ্চায়েত তৃণমূলের কাছে থেকে ছিনিয়েও নিয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম জোট।
কংগ্রেস এই জেলায় ফের প্রধান শক্তি হয়ে উঠতে পারে কি না তা বলবে ভবিষ্যৎ। এখন এই জেলায় তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপিই। অন্তত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর সেটা বলতে হবেই। তবে কংগ্রেস ও বামেরা ধীরে ধীরে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ফলে বাম-কংগ্রেস যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই এগোচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।