বিজেপি চালিয়ে যাবে দল ভাঙানোর খেলা
নিউজ ডেস্ক::একুশে হেরে প্রাক্তন হয়েছেন এক ‘হেডস্যার’। তাঁর পথ ধরে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বে এসেছেন অপর এক হেডস্যার। তিনি এসেই মন্থন শিবিরে মগ্ন হয়েছেন ছন্নছাড়া বঙ্গ বিজেপিকে এক করতে। সেই অভিযানে নেমে তিনি স্থির করে দিয়েছেন বিজেপির রোডম্যাপ। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি কোন পথে মোকাবিলা করবে তৃণমূলের, তা চূড়ান্ত।
একুশের নির্বাচনে তৃণমূলকে ভেঙে ছত্রখান করেও বিজেপির লক্ষ্যপূরণ হয়নি। এক পায়ে খেলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধরাশায়ী করে ছেড়েছেন বিজেপিকে। বিজেপি ২০০ আসনের লক্ষ্যে বাংলায় খেলতে নেমে ৭৭-এই বোল্ড আউট হয়েছে। তৃণমূল যথারীতি দুই শতাধিক আসনে জিতে ফের বাংলার কুর্সি দখল করে নিয়েছে। আর তারপর থেকেই বিজেপির ল্যাজেগোবরে অবস্থা। একের পর এক নির্বাচনে হার। উপনির্বাচন হোক বা পুরসভা নির্বাচন সর্বত্রই পিছিয়ে পড়ার ছবি।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের মোকাবিলায় রাজ্য বিজেপির দায়িত্ব নিয়েছেন সুনীল বনশল। পর্যবেক্ষক হিসেবে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। বাংলার দায়িত্বে এসেই বৈদিক ভিলেজের মন্থন শিবিরে তিনি জানিয়ে দিলেন বিজেপির চলার পথ। বিজেপি পর্বসূরির নীতি অবলম্বন করে দল ভাঙানোর থেলা চালিয়ে যাবে বলে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন।
বাংলার মন জয় করতে একদিকে তিনি যেমন নরম মনোভাব দেখানোর রাস্তা নিয়েছেন, তেমনই তৃণমূলকে দুর্বল করাও তাঁর কূটকৌশলের মধ্যে থাকবে। তিনি বিজেপির নেতা-নেত্রীদের দুর্নীতি থেকে শত যোজন দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আর একেবারেই বিতক্রিত মন্তব্য বন্ধ করতে বলেছেন। সেইসঙ্গে তিনি ভিতরে ভিতরে প্রতিপক্ষকে ভাঙানোর খেলাও চালিয়ে যাওয়ার সওয়াল করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল বঙ্গ সফরের এসে প্রশিক্ষণ শিবির থেকে বার্তা দিয়েছেন দল ভাঙানোর কৌশল জারি রাখতে হবে। অমিত শাহ একুশের আগে দলকে বড় করার যে বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, তা অনুসরণ করবেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সুনীল বনশলও। দলের আদি নেতাদের গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ভিন্ন দল থকেে আসা নবাগতদেরও গুরুত্ব দিতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
একুশের নির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ার অন্য দল থেকে আসা নেতারা অনেকেই ফিরে গিয়েছেন পুরনো দলে। যাঁরা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকে গুরুত্ব পেয়েছেন বিশেষভাবে, অনেকে গুরুত্ব পাননি। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে আসার পর বিজেপিতে ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নেতা। কিন্তু বনশল বলে দিয়েছেন, সবাইকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। আদি হোক বা নব্য কাউকেই খাটো চোখে দেখা হবে না।
মন্থন শিবিরের দ্বিতীয় দিনে সাংগঠনিক আলোচনা পর্বে, সুনীল বনশল বলেন, দলকে বড় করতে হবে। অন্য দল থেকে কেউ এলে তাঁকে সম্মান দিতে হবে। দলকে তৈরি করতে হবে আকর্ষণীয়। যেন ভিন্ন দলের নেতারা আকৃষ্ট হন। এবং মানুষও আকৃষ্ট হয়। বুথ সংগঠনকে শক্তিশালী করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সেই পরামর্শ মেনে রাজ্য বিজেপিত কতটা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে আগে।