কলকাতার ট্রাম
নিউজ ডেস্ক::কলকাতায় ট্রাম নিয়ে অনেক আন্দোলন চলছে। বিতর্ক চলছে ট্রাম থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে। সেখানে কুমোরটুলিতে এই চা ও খাবারের দোকানটি ট্রামের পক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। এটি দেখতে যেন ট্রামের কামরা। কিন্তু আদতে তা নয়। ওভাবে বানানো হয়েছে বিষয়টিকে। তাই লুক পুরো ট্রামের মতো।
খুব সাধারণ কিছুকে এমন অসাধারণ ভাবে উপস্থাপন করা যায় সেটা এখানে না আসলে বোধ হয় জানাই যাবে না। এই ছোট্ট ট্রামটা হল মদন দা’র চায়ের দোকান, কুমারটুলিতে। এই চা এর দোকানটা প্রায় ৩৫ বছর ধরে এখানে আছে বটে। তবে আগে ছিল ছোটো চা এর গুমটি। সেটাই এখন ট্রাম টি শপ।
কিন্তু কুমারটুলির মতো শিল্পীদের ঠেকে চা এর দোকানেও শিল্পের ছোঁয়া থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক, তাই না? তাই অবশেষে এই বছর মার্চ মাসে দোলের পর সেই চা এর গুমটি আকার নেয় এই ছোট্ট ট্রামের। কিন্তু তারপর লকডাউন শুরু হওয়ায় পুরোটা কমপ্লিট করতে পারেননি তারা। তবে তাদের ইচ্ছে এই জগৎধাত্রী পুজোর পর এই ট্রামকে নিজেদের মনের মতো করে পূর্ণতা দেওয়া।
না, এখানে বিশেষ কোনো মালাই চা, বা চকলেট চা পাওয়া যায় না। নিতান্তই খুব সাধারণ একটা চা এর দোকান বা ঠেক বলা যেতে পারে। এখানে দু ধরণের চা পাওয়া যায় – নরম্যাল চা, স্পেশাল চা।
গুগল ম্যাপের ভরসায় ভুলেও যাবেন না। এই চা এর দোকানের প্রপার ঠিকানা – ৪০ নম্বর বনমালী সরকার স্ট্রীট। কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সমিতির পাশে। খুবই সাধারণ একটা চা এর দোকান। তাও বলবো ওদিকে গেলে একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। বেশ একটু অন্যরকমই ভালো লাগবে।
এমনই এক আসল ট্রাম কামরা রাখা আছে ধর্মতলায়। সেটি ট্রাম মিউজিয়াম। স্মরণিকা ট্রাম মিউজিয়ামকলকাতা ট্রামের ১৫০ বছরের ইতিহাসকে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্যে কলকাতা ট্রামওয়ে কোম্পানি এই অভিনব ট্রাম মিউজিয়াম তৈরি করেছে। ২০১৪ সালে র ২৯ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয় কলকাতা ট্রাম মিউজিয়ামটির। স্মৃতি বিজড়িত এই মিউজিয়ামের নাম দেওয়া হয় ‘স্মরণিকা’।
ধর্মতলার ট্রাম ডিপোয় রাখা হয়েছে এই মিউজিয়াম ট্রামটি। ট্রাম মিউজিয়ামে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। প্রথম কামরাটি ক্যাফেটেরিয়া, দ্বিতীয় কামরা হল মিউজিয়াম। কলকাতায় ট্রামের শুরুর দিনগুলি সম্পর্কিত নানা খুঁটিনাটি ইতিহাস জানা যাবে এখানে। এটিই দেশের একমাত্র ট্রাম মিউজিয়াম।
কামরার দেওয়াল জুড়ে পুরানো কলকাতার ছবি ও ট্রামের বিবর্তনের ছবি লাগানো আছে। ছোট কাচের বাক্সে রাখা আছে প্রথম ঘোড়ায় টানা ট্রামের রেপ্লিকা দেওয়ালে সাজানো ট্রাম কন্ডাকটরদের বাহুবন্ধ, ট্যাসেল থেকে ব্যবহারিক টুপি, ব্যাজ ও বেল্ট। দেখে নেওয়া যাবে ট্রামটিকিটের বিবর্তনের ইতিহাস। কাঁচের বাক্সে দেখা যাবে বলাকা ট্রামের রেপ্লিকা, ফ্লাট ওয়াগন এর রেপ্লিকা সহ আরো কিছুজিনিস। এছাড়াও ট্রাম সম্পর্কিত অনেক কাহিনী। দেওয়াল জুড়ে ফ্রেমে সাজানো আছে পুরানো দিনের ট্রামের পথচলার গল্প।