মহালয়া – পুরান মতে ‘তর্পণ’
নিউজ ডেস্ক::হিন্দুধর্ম পুনর্জন্মে বিশ্বাসী।গীতায় কৃষ্ণ বলছেন,আত্মা অমর।শুধু এক বস্ত্র ত্যাগ করে আরেক বস্ত্র ধারণ করে মাত্র।যেহেতু আত্মা অমর তাই সে কোনো না কোনো রূপে কোথাও না কোথাও অবস্থান করে।এখানে ‘স্বর্গ’ বা ‘নরক’ ইত্যাদি শব্দগুলো সরিয়ে রেখেও বলা যায়,আমার পূর্বপুরুষ কোনো এক লোক থেকে আমায় নিয়ত অবলোকন করছে।আমার সুখে তার সুখ,আমার দুঃখে তার দুঃখ।সেই পুরপুরুষকে তিল যুক্ত জল দান করাকেই বলে তর্পণ।
সংস্কৃত ‘তৃপ’শব্দ থেকে আগত ‘তর্পণ’ শব্দের অর্থ তৃপ্ত বা সন্তুষ্ট করা।কাকে সন্তুষ্ট করা?আমাদের পূর্বপুরুষদের।বৈদিক মতে প্রতিদিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জলদান করা হতো বৈদিক যুগে।কিন্তু জীবন যত ব্যস্ত হলো তখন আর প্রতিদিন তা সম্ভব হয় না।তখন একটি নির্দিষ্ট দিনে পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে ‘তর্পণ’ অর্থাৎ তৃপ্ত করা উত্তর পুরুষের কর্তব্য।হিন্দু শাস্ত্রে নানা রকম তর্পণ এর কথা আছে।যেমন দেবতর্পণ,ঋষি তর্পণ,দিব্যতর্পণ,যমতর্পণ ইত্যাদি।কিন্তু মহালয়ার দিন আমরা যা করি তা আসলে পিতৃতর্পণ।
ঘটনাচক্রে আশ্বিনের দুর্গা পূজার আগের অমাবস্যায় এই পিতৃতর্পণ করা হয়।এর সঙ্গে দুর্গা পূজার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে সাধারণভাবে গঙ্গার জলে নিমজ্জিত হয়ে হাতে কোশাকুশি নিয়ে তিল জল দান করা হয় গঙ্গা বক্ষে।এই রীতিকেই বলে তর্পণ।