ভারতের প্রথম মঙ্গলযানের যাত্রা শেষ!
নিউজ ডেস্ক::নিঃশব্দেই থেমে গেল পথ চলা। ভারতের প্রথম মঙ্গলযান যাত্রা শুরুর এক দশক পর বিদায় জানাল। ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল অবশেষে। রবিবার ২ অক্টোবর এক দশকের যাত্রা শেষ হয় ইসরোর ‘মার্স অরবিটার মিশন’ বা ‘মম’-এর। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় শেষ হয় ভারতের প্রথম মঙ্গল গ্রহের অভিযান।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো এক দশক আগে মার্স অরবিটার মিশনের মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহে অভিযান শুরু করে। ২০১৩ সালো মঙ্গলযান পাঠানোর পর থেকে তা মঙ্গলে কাজ করে চলছিল। কিন্তু তার ব্যাটারিকে আর জাগিয়ে তোলা যাচ্ছে না। ফলে মঙ্গলের বুকে আর তা কাজ করতেও পারছে না। ইসরো তাই বাধ্য হল সম্পর্ক ছিন্ন করে দিতে।
যদিও মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পক্ষ থেকে এখনও কোনও ঘোষণা করা হয়নি। কাজেই লাল গ্রহকে প্রদক্ষিণকারী মহাকাশযানটি ফের বাঁচিয়ে তোলার চেষ্টা এখনও চলছে কি না, সেই জল্পনা থেকেই যাচ্ছে। তবে সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই মঙ্গল অভিযান রদের বার্তা দিয়েছে ইসরোর একটি সূত্র মারফত।
ইসরোর এক সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ভারতের মঙ্গলযানটিতে আর কোনও জ্বালানি অবশিষ্ট নেই। স্যাটেলাইটের ব্যাটারি শেষ হয়ে গিয়েছে। এমনকী ইসরোর সঙ্গে মহাকাশযানটির সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলে একের পর এক গ্রহণ হয়েছে। সাত থেকে সাড়ে সাত ঘণ্টা ধরে চলেছে এক-একটি গ্রহণ। তার ফলেই ব্যাটারি শেষ হয়ে গিয়েছে। আর তাঁকে জীবিত করা যাচ্ছে না।
ইসরো আগেই জানিয়েছিল, মঙ্গলযানের ব্যাটারিগুলি এমনভাবেই নকশা করা হয়েছিল, যা ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত গ্রহণ সহ্য করতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি যে ধরনের গ্রহণ হয়েছে মঙ্গলে, তা ওই সময়কাল পেরিয়ে আরও অনেকটাই বেশি। সেই সময়কাল পেরিয়ে যাওয়ায় ব্যাটারির সব শক্তি ফুরিয়ে গিয়েছে।
মঙ্গলে এই মার্স অরবিটার মিশন জারি ছিল ৯ বছরেরও বেশি সময়। অথচ ইসরো নকশাটা করেছিল মাত্র ছ-মাসের জন্য। ছ-মাস আয়ুর যান ন-বছর চলেছে সেটাই অনেক। ২০১৩ সালে মঙ্গলযানটিকে একটি পিএসএলভি-সি২৫ রকেটের মাধ্যমে মঙ্গলের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছিল। এটিই ছিল ভারতের প্রথম আন্তঃগ্রহ মহাকাশ অভিযান।
ইসরো এই অভিযানের মাধ্যমে বার্তা দিয়েছিল ভারতও অন্যগ্রহে অভিযান করতে পারে। সেটা বাকি বিশ্বকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিল তারা। এই অভিযান ভারত খরচ করেছিল মাত্র ৪৫০ কোটি টাকা। এবং এই অভিযানকে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল সবথেকে সাশ্রয়ী মঙ্গল অভিযান হিসেবে। সেই অভিযান শেষ হল অবশেষে।
মহাকাশ যানটিতে পাঁচটি যন্ত্র ছিল। মার্স কালার ক্যামেরা, থার্মাল ইনফ্রারেড ইমেজিং স্পেকট্রোমিটার, মিথেন সেন্সর ফর মার্স, মার্স এক্সোস্ফেরিক নিউট্রাল কম্পোজিশন অ্যানালাইজার এবং বাইম্যান আলফা ফটোমিটার। ইসরোর প্রাক্তন প্রধান কে সিভান জানিয়েছিলেন, ২০২১ সালে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের পর ভারত মঙ্গলযান-২ অভিযান করবে। অবশ্য সেই অভিযান এখনও শুরু হয়নি।