স্কুল শিক্ষা দপ্তরের গাইড লাইন প্রসঙ্গে কিঙ্কর অধিকারী(রাজ্য সম্পাদক,শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ)
নিউজ ডেস্ক:: রাজ্য সরকার স্কুল শিক্ষা বিষয়ে নতুন কিছু গাইড লাইন এনেছেন।সেই গাইড লাইন উল্লেখ করে কোথায় অসুবিধা তা নিয়ে কিঙ্কর অধিকারী স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন।
স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে পাঠানো গাইডলাইনে বলা হয়েছে-
১) প্রতিবছর ২ রা জানুয়ারি বা তারপরের দিনগুলি থেকে করতে হবে এই “graduation ceremony”।
২) এক ক্লাস থেকে পরবর্তী ক্লাসে ওঠা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সম্মান জানাবেন।
৩)ক্লাস টিচার। চকলেট মিষ্টি দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত জানাবেন তার ক্লাসে।
৪) ক্লাস টিচার সব ছাত্রছাত্রীদের একসঙ্গে করে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন।
৫) সব নবাগত ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস টিচারকে তাদের পরিচয় জানাবেন।
৬)স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বা ক্লাস টিচার নবাগত ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলের ইতিহাস বলবেন পাশাপাশি রাজ্য সরকার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বই,স্কুলের ইউনিফর্ম, জুতো, স্কুলব্যাগ, স্বাস্থ্য পরিসেবা, মিড ডে মিল পরিষেবা গুলো যে প্রদান করছে সেগুলির সুবিধা ও জানাবেন।
৭)প্রত্যেক স্কুলে একটি নির্দিষ্ট ফটো কর্নার থাকবে যেখানে সব ছাত্রছাত্রীদের ফটো জন্ম তারিখ সহ লাগাতে হবে।
৮)ক্লাস টিচারের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের ফটো নিতে হবে প্রত্যেক বছর এবং সেটাও ফটো কর্নারে লাগাতে হবে।
৯)প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর করা একটি ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের দিতে হবে।
১০)ক্লাস মনিটর, কালচারাল মনিটর, স্পোর্টস মনিটর মিড ডে মিল মনিটর এর মনোনয়ন এই সময়সীমার মধ্যেই করতে হবে।
১১) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গ্রুপ লার্নিং- এর ব্যবস্থা করতে হবে।
১২) ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে বসার ব্যবস্থা এমনভাবেই করতে হবে যেটা পঠন-পাঠনের স্বার্থে সর্বাধিক ভালো হয়।
১৩) এই অনুষ্ঠানের বা সম্মান জানানোর গোটা তথ্যচিত্র আকারে তৈরি করতে হবে এবং প্রত্যেক বছর স্কুলগুলিকে বুকলেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য হলো-
১) এগুলি কার্যকর করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা কোথা থেকে আসবে?
২) শিক্ষার মান উন্নয়নে যেসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করা দরকার সেই আসল কাজগুলো অবহেলিত থাকলে প্রকৃত শিক্ষার মান বা পরিবেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে কি?
৩) প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর বিরাট শূন্যতা, বিদ্যালয়গুলির সার্বিক পরিকাঠামোর অভাব, প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে গ্রুপ সি/ডি কর্মীর অস্তিত্বই নেই। প্রায় ১৮ ধরনের শিক্ষা বহির্ভূত কাজে ব্যস্ত রাখা হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীদের। এতে কি শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে? সার্বিকভাবে শিক্ষা দপ্তরের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা না করেই বলছি, এই আসল কাজ গুলি সম্পন্ন হলে শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়নে তা অনেক বেশি কার্যকরী হবে।