‘সেফ ড্রাইভ,সেভ লাইফ’ – দু’চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে প্রহসন
নিউজ ডেস্ক: শহর কোলকাতা ও পার্শ্ববর্তী শহরতলিতে মুখ্যমন্ত্রীর 'সেফ ড্রাইভ,সেভ লাইভ' আসলে প্রহসনে পরিণত করেছে মোটরসাইকেল চালকেরা।পরিসংখ্যান বলছে,নতুন শ্লোগান ও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ট্রাফিক কন্ট্রোল বোর্ডের উদ্যোগে চার চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে ১৯ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে।কিন্তু দু'চাকার গাড়ির ক্ষেত্রে সেই দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বিশেষকরে রাতের দিকে ভিআইপি রোড, বাইপাস ও কোলকাতা সংলগ্ন হাইওয়েগুলো দুর্ঘটনার ‘জোন’ হয়ে উঠছে।মাথায় হেলমেট এখন বাহুল্য।মোটরসাইকেল চালকদের একটা বড়ো অংশকে রাস্তায় দেখা যায় হেলমেটবিহীন।যদি তারা কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পতাকা বহন করে তাহলে পুলিশ নীরব দর্শক। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?কেন এতো রক্ত ঝরছে?
ট্রাফিক দপ্তর,সমাজ তাত্ত্বিক,রাজনীতিক ও মনোবিদরা বলছেন, এর পিছনে আছে একাধিক কারণ।
যেমন,
১) গত কয়েক বছরে আয় বৃদ্ধির জন্য অজস্র মদের দোকান ও বারের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।তার ফলে নব্য যুবসমাজ নেশায় প্রলোভিত হচ্ছে।নেশা করছে।আর নেশা করে গাড়ি চালানোর পরিণাম দুর্ঘটনা।
২) ট্রাফিক পুলিশের তদারকির অভাব।শুধু তদারকির অভাব নয়,ট্রাফিক পুলিশের প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে হাইওয়ে বা বড়ো রাস্তার পাশের দাঁড়িয়ে ঘুষ নিয়ে বেআইনি যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া।ফলে নেশাগ্রস্থ যুবকদের মধ্য থেকে ভয় চলে গেছে।ওরা জানে,পুলিশ ধরলে কিছু টাকা দিলেই হবে।
৩) সন্তানের উপর বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হচ্ছে।ফলে যখন তখন ওরা দু’চাকার গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে।অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে তারা।
৪) প্রকৃত শিক্ষার অভাব।প্রকৃত শিক্ষা ছাত্রদের ধীর-স্থির ও সচেতন করে।বর্তমানের প্রথগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের প্রচুর নম্বর হয়তো পাইয়ে দেয়, কিন্তু মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয় না।তারই পরিণামে সৃষ্টি হয়েছে একদল উশৃঙ্খল যুবসম্প্রদায়।
৫)রাজনৈতিক কারণেই পুলিশ কখনো কখনো নীরব দর্শক হয়ে থাকে।
কয়েক কোটি বছর আগে কচ্ছপ বুঝেছিল,নিজেদের নিরাপত্তার জন্য উপরে একটা খোলস দরকার।কিন্তু এযুগের তথাকথিত শিক্ষিত কিছু যুবক কচ্ছপের সেই উপলব্ধি ও শিক্ষা পায় নি।তারা হেলমেটের প্রয়োজন বুঝে উঠতে পারে নি।
একটা বিমূঢ় যুগের বিভ্রান্ত যুবকের দল প্রতিদিন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যুবরণ করছে।সরকার ও আমরা শুধু নীরবে তাকিয়ে আছি।