গোহারা হেরেও ‘নন্দকুমার মডেলে’ আস্থা বিজেপির
নিউজ ডেস্ক::বাম-বিজেপির ‘নন্দকুমার মডেল’ ব্যর্থ হয়েছে মহিষাদলে। তবু এখনই পিছপা হতে নারাজ। নন্দকুমার মডেলে আস্থা রেখে ফের সমবায় ভোটে জোট বাঁধতে চলেছে বিজেপি ও বামফ্রন্ট। নন্দকুমারে যা হয়েছিল, তা হয়নি মহিষাদলে। গোহারা হারতে হয়েছে। তারপর বাম-রাম জোট হচ্ছে খারুই গটরা সমবায় সমিতি নির্বাচনে।
তৃণমূলকে হারাতে নেমে হালে পানি না পেয়ে বামেদের হাত ধরতে হয়েছে বিরোধীকে। শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় একের পর এক সমবায় সমিটি নির্বাচনে জোট হচ্ছে বাম-বিজেপির। সম্প্রতি নন্দকুমার সমবায় সমিতি নির্বাচনে মঞ্চ গড়ে বিজেপি ও সিপিএম তৃণমূলের বিরুদ্ধে বড় জয় তুলে নিয়েছে। তৃণমূলকে হোয়াইট ওয়াশ করে ছেড়েছে তারা। তারপর থেকে এই নন্দকুমার মডেল অনুসরণ করে বিজেপি ও বাম তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হতে চাইছে।
নন্দকুমারে জয়ের পর অতি উৎসাহে মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় সমিতির নির্বাচনে বাম ও বিজেপি জোট করে জোরদার প্রচার চালায়। বাম-বিজেপি নেতারা একসঙ্গে মিলে প্রচার করেছে। তারপরও সাফল্য ধরা দিল না। তৃণমূল লাল-গেরুয়ার জোটকে গোহারা হারিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখল। এই সমবায় সমিতির নির্বাচনে ৭৬ আসনের মধ্যে ৬৮ আসনে জয় পায় তৃণমূল। বিজেপি ও বামেরা জিতেছে মাত্র ৮টি আসনে।
কিন্তু এই শোচনীয় হারের পরও বিজেপি মনোবল হারাতে নারাজ। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে
পূর্ব মেদিনীপুরের আরও একটি সমবায় সমিতি নির্বাচনে সেই নন্দকুমার মডেলকেই হাতিয়ার করল বিজেপি। খারুই গটরা সমবায় সমিতি নির্বাচনে বাম ও বিজেপি জোট গড়েই তৃণমূলের মোকাবিলায় নামল।
আগামী ৪ ডিসেম্বর এই সমবায় সমিতিতে নির্বাচন। সোমবার থেকে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট ও বিজেপি প্রার্থীরা একযোগে মিছিল করল। বিজেপির তরফে তমলুক সাংগঠনিক জেলার কিষাণ মোর্চার সভাপতি, মণ্ডল সভাপতি এবং সিপিএমের তরফে জোনাল কমিটির সদস্যরা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থীরা তো ছিলেনই। তাঁরা বলেন, মানুষের স্বার্থে এই জোট করা হয়েছে। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের জোট নয়। তৃণমূলকে হারাতে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
তবে এর পাশাপাশি প্রশ্ন উঠে পড়েছে, মহিষাদলে নন্দকুমার ফ্লপ করে যাওয়ার পর আর কি তা ফলপ্রসূ হবে? তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তৃণমূলের তরফে সৌমেন মহাপাত্র বলেন, আমরা আগে থেকেই বলছিলাম সিপিএম ও বিজেপি ভোট ভাগাভাগি করে নিয়ে চলছে। সিপিএম বিধানসভায় বিজেপিকে ভোটের ভাগ দিয়েছিল। সেই কারণেই তারা শূন্য হয়ে যায়। এখনও তারা এই পদ্ধতি চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, নন্দকুমার সমবায় সমিতি নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে দিয়েছিল বামফ্রন্ট ও বিজেপি জোট। তৃণমূল নন্দকুমারের ওই নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারেনি। সেই সাফল্যকে পাথেয় করে মহিষাদলেও একই পন্থা অবলম্বন করেছিল বাম-বিজেপি। তৃণমূলকে হারাতে বিজেপি ও সিপিএম এক জোট হয়ে নির্বাচনে লড়েছে, কিন্তু তৃণমূলকে তারা হারাতে ব্যর্থ। আবারও খারুইয়ে একই পন্থা নিলেও সাফল্য ধরা দেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।