ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ তিনজন
নিউজ ডেস্ক::তৃণমূলের পঞ্চায়েত, তবু পরিষেবা পাননি গ্রামবাসীরা। শনিবার তাই শুভেন্দুর দুয়ারে তৃণমূলের সভামঞ্চ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই নির্দেশ মেনে ইস্তফা দিলেন তিনজন।
কাঁথির সভামঞ্চ থেকে অভিষেকের নির্দেশের পর ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই জমা পড়ল পদত্যাগপত্র। তৃণমূলের কংগ্রেসের সংগঠনে যে এখন অভিষেকের গুরুত্ব বেড়েছে, তা এই তিনজনের পদত্যাগপত্রই প্রমাণ। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে যথার্থ কাজ না কররা অভিযোগে প্রধান-উপপ্রধনা ও অঞ্চল সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া একটা দৃষ্টান্ত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কাঁথিতে শনিবার সভা শুরুর আগে হঠাৎ কনভয় থামিয়ে একটি গ্রামে প্রবেশ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গাড়ি থেকে নেমে সটান হেঁটে তিনি ঢোকেন গ্রামে। গ্রামবাসীদের কাছ একাধিক অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন তিনি। সেখান থেকেই তিনি কড়া নির্দেশ দেন দলকে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে পদত্যাগ করতে বলেন। পরে সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি এক কথা বলেন।
ওইদিন কাঁথির মারিশদা গ্রামে গিয়ে তিনি ঘোরেন অন্তত ৮-১০টি বাড়িতে। গ্রামবাসীদের মুখে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনেই তিনি পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতির উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মানুষের কথা শুনে বলেন, ওই অঞ্চলের পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। তারপর সভা মঞ্চেও তিনি সরব হন বিষয়টি নিয়ে। একেবারে নাম করে তিনি প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে ইস্তফার বার্তা দেন।
অভিষেক এদিন বলেন, আজ গ্রামে গেলাম। মারিশদার গ্রামে বেশ কিছু এসটি পরিবারের বাস। তাঁদের দুর্দশা দেখে অভিষেক বিস্ময় প্রকাশ করেন। ওঁরা বললেন প্রধান-উপপ্রধানকে বলে কোনও লাভ হয়নি। বাড়ি নেই, পানীয় জল নেই। কী করুণ অবস্থা দেখে এলাম। তাঁরা কেউ টাকা পয়সা চাইছেন না। আমি বললাম, যাঁরা কনভয় হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের কাছে কেন যাননি? তাঁরা বলেন, গিয়েও লাভ হয়নি, কেউ কথা শুনতে চাননি।
একথা বলার পরেই অভিষেক বলেন, মারিশদা অঞ্চলের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রমাকৃষ্ণ মণ্ডল, অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্ররাও দায়ী। তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। না হলে আইনি ব্যবস্থা হবে। মানুষের জন্য কাজ না করতে পারলে, রাজনীতি করে লাভ নেই। এরপর তিনি পরামর্শ দেন জনসংযোগের।
অভিষেক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যদি গ্রামে গ্রামে যেত পারেন, বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারেন, তাহলে আমরা কে এমন হনু যে, আমরা পারব না। তৃণমূল করতে গেলে মানুষের পাশে থাকতে হবে, মানুষের কাজ করতে হবে। তাই কাল থেকেই প্রত্যেকে ১০টা করে গ্রামে যান। ৫০ জন নেতা আছেন অন্তত, তাঁরা ৫০০ গ্রামে যান। মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ গড়ে তুলুন।