কৃষকের পাশে মমতার সরকার
নিউজ ডেস্ক::কৃষি নির্ভরশীল দেশ ভারত বর্ষ। কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল এদেশের সভ্যতা। সেসব কৃষকদের উপরই কালা কানুন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দেশের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষকদের উপর নিশংস অত্যাচার এনেছিল মোদি সরকার। মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল বহু কৃষককে। রাজধানীর বুকে কৃষকদের দীর্ঘদিনের প্রতিবাদ রোধ করেছিলো সেই কালাকানুনের। আজও কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বঞ্চনার স্বীকার কৃষক পরিবার গুলি।
কিন্তু ২০১১ সালের ২০ মে পর বাংলার মসনদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছে, কৃষক পরিবার গুলির পাশে সর্বদাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মমতার সরকার। সময় যত গড়িয়েছে রাজ্য সরকার একাধিক প্রকল্প নিয়ে এসেছে কৃষক স্বার্থে। রাজ্য সরকারের “কৃষক বন্ধু” প্রকল্পে উপকৃত রাজ্যের ৩৮ হাজার ৬০০ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক বন্ধু। কৃষক পরিবারগুলি কে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে বছরে ১০ হাজার টাকা ভাতা ও পরিবারের কেউ মারা গেলে দু লক্ষ টাকা প্রদান করা হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এর পাশাপাশি জমির মিউটেশন, কৃষি জমির খাজনা মুকুব সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে মমতার সরকার।
চলতি মরশুমে রাজ্যের জঙ্গলমহলের চারটি জেলা সহ বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান এ বৃষ্টি কম হওয়ায় রবি ও বোরো ধান চাষে কৃষকদের সাহায্যার্থে সেচ দপ্তর, জল সম্পদ বিভাগ ও কৃষি দপ্তরকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা সেরে ফেলেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলি। কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, জল সম্পদ মন্ত্রী মানুষ ভূঁইয়া সহ বিভাগীয় সচিব ও আধিকারিকদের নিয়ে হয় এই বৈঠক। আলোচনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জলের অভাবে যাতে রবি ও বোরো চাষে চাষীরা যাতে ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট এই তিনটি দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রবি চাষে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে জল সরবরাহ করবে রাজ্য সরকার, নলকূপ, সেচ খাল, ড্যাম, ক্ষুদ্র সেচ ছাড়াও সৌর বিদ্যুৎ চালিত বিভিন্ন পাম্পের মাধ্যমে এই সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি বোরো চাষের জন্য চলতি বছরে ১ লক্ষ ২২ হাজার ৮০৪ হেক্টর জমিতে জলের যোগান দেবে রাজ্য সরকার। ২০২২ – ২০২৩ বর্ষে মোট তিন লক্ষ্য ৮২ হাজার ৮৩ হেক্টর জমিতে জল সরবরাহ করবে রাজ্য জনসম্পদ দপ্তর।
রাজ্যের সবকটি গ্রামে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পৌঁছে দিয়েছে বর্তমান সরকার, তারপরও বিদ্যুতের খরচ কমাতে সৌর বিদ্যুতের ওপর বাড়তি জোর দিতে চাইছে মমতার সরকার। এখনো পর্যন্ত জেলার কোন প্রান্তের কৃষক যদি পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিনে চালিত পাম্প ব্যবহার করে এবং সমস্যার সম্মুখীন হয়, অবিলম্বে সেইসব কৃষকরা যাতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সেই অসুবিধার কথা তুলে ধরেন, সেই আবেদন জানান মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুইয়া। সমস্যার কথা উঠে এলে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস জল সম্পদ দপ্তরের।
চলতি মরশুমে বর্ষা কম হওয়ায় রাজ্যের বেশ কয়েকটি জলাধারে, জল ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী কম জল আছে জলধার গুলিতে। রাজ্যের ধান উৎপাদনে জলের ঘাটতি যাতে তার কোন প্রভাব না পড়ে, সেই জন্যই রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ। মাটির নিচের জলস্তরকে চাঙ্গা রাখতে, বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা আবারো পুনরব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য আরো একাধিক পদক্ষেপের পথে হাঁটছে বাংলার সরকার।