‘চার্চের নগরী কলকাতা’- পিঠে রোদ্দুর লাগিয়ে একদিনে ঘুরে নেওয়া যায় খ্রিস্টানদের উপাসনালয়
নিউজ ডেস্ক::প্রায় ৭০০ বছর ধরে ভারত তথা কোলকাতায় এসেছে বহু ধর্ম-বর্ণ-ভাষাভাষী ও সম্প্রদায়ের মানুষ।এটাই ভারতীয় সংস্কৃতির মূল সূত্র।তাই কলকতাকে বলাহয় 'এক টুকরো ভারত।'
ব্রিটিশ,পর্তুগিজ, আর্মেনিয়ানর কোলকাতায় আসার পরেই গড়ে তোলে তাঁদের অনেক উপাসনালয়(গির্জা)।ঈশ্বর পুত্র যীশুর ক্রুশবিদ্ধ মূর্তির সামনে তাঁরা উপাসনা করেন,ধ্যান করেন।এমনি কয়েকটি চার্চে এক দিনেই ঘুরে আসি চলুন।
১)আর্মেনিয়ান চার্চ — গবেষকেরা বলছেন কোলকাতায় আর্মেনিয়ানদের তৈরি গির্জা কলকাতার প্রাচীনতম গির্জা।প্রথম থেকেই ব্রাবনরোড, চিনাবাজার অঞ্চলে তারা বাস করতেন।ওখানেই তাঁরা তাঁদের উপাসনালয় তৈরি করেন।এই চার্চে পুরোনো স্থাপত্যের সুন্দর নিদর্শন আছে।তবে আধুনিক চার্চগুলোর মতো আভিজাত্য নেই।
২)সেন্ট থমাস চার্চ – পার্কস্ট্রিট মিডিলটনরো এ অবস্থিত এই চার্চকে খুব পবিত্র বলা হয়।কারণ ১৯৯৭ সালে এই চার্চেই মাদার টেরেসার মৃতদেহ শায়িত রাখা হয়েছিল।১৮৪১ সালে এই চার্চ গঠন শুরু হয় ও ১৮৪২ সালে সকলের জন্য চার্চের দরজা খুলে দেওয়া হয়।এখানেই ব্রিটিশ পাদ্রীরা নিয়মিত ধ্যানমগ্ন হয়ে ঈশ্বর পুত্র যীশুকে স্মরণ করতেন।
৩)সেন্ট জেমস চার্চ – এর পোশাকি নাম জোড়া গির্জা।যদিও এটি প্রথমে ছিল লেবুতলা পার্কে।পরে স্থাপত্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য ওই উপাসনালয় ভেঙে নতুন জমিতে নতুন করে করাহয় লোয়ার সার্কুলার রোএ।এখানে গির্জার ভিতরে যীশুর জীবনের নানা অবস্থা ছবির মধ্য দিয়ে দেখানো হয়েছে।
৪) সেন্ট এনড্রুজ চার্চ(লাল সাহেবের গির্জা) – যেখানে আগে পুরোনো মেয়র কোর্ট ছিল সেই জমিতেই ১৮১৮ সালে গড়ে ওঠে সেন্ট এন্ড্রুজ চার্চ।অপূর্ব গ্রিক স্থাপত্য কলার নিদর্শন এই চার্চ।ভেতরে প্রবেশ করলে উপলব্ধি করা যায় নীরবতার শান্তিকে।
৫) সেন্ট পলস ক্যাথিড্রায়াল – সম্ভবত কোলকাতার সবচেয়ে বিখ্যাত চার্চ এটি।১৮১৯ নাগাদ বিশপ মিডলটনের উদ্যোগে একটি গির্জা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় তৈরি হয় ওই গির্জা। সেই জঙ্গলের মধ্যেই ১৮৩৯ সালে গির্জার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ইন্দো-গথিক স্থাপত্যের নিদর্শন এই গির্জাটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল আট বছর। ইন্দো-গথিক শৈলীতে নির্মিত এই গির্জাটি ১৮৪৭ সালে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।এই গির্জার অনুপন স্থাপত্যের নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হতে হয়।আর ভিতরে আছে অপার শান্তির বার্তা।
৬) ক্যাথিড্রায়াল অফ দ্য মোস্ট হোলি রোজারী – ইতিহাস বলে,জব চার্নক প্রথম কোলকাতায় এসে সুতানুটি গ্রাম কেনেন।তারপর তাঁরই সাহায্যে পর্তুগীজরা তৈরি করে এই চার্চ।মুরগীহাটা অঞ্চলে ১৭৯৯ সালে স্থাপিত হয় এই গির্জা।
এ ছাড়াও কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছোট বড়ো অনেক গির্জা দেখে নিতে পারেন এক বেলার মধ্যেই।
চালুন ঈশ্বরপুত্র যীশুর স্মরণে শীতের আমেজ মেখে একদিনের মধ্যে ঘুরে আসি কোলকাতার সুদৃশ্য গির্জাগুলো।