মহামানব যীশু সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ

0 0
Read Time:4 Minute, 8 Second

নিউজ ডেস্ক: ১৯০০ সলে লস এঞ্জেলসে স্বামী বিবেকানন্দ ‘ঈশদূত যীশুখ্রিস্ট’ নামে একটি নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দেন।সেই বক্তৃতায় তিনি স্পষ্ট কতে বলেছেন,যীশু শুধু ঈশ্বরপুত্র নয়,তিনি স্বয়ং ঈশ্বর। তিনি বক্তৃতায় বলেন,ব্যক্তিজীবনের মতো সমাজজীবনেও উত্থান পতন আসে।মহামানব যীশু যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন সমাজজীবনে ঘোর পতন নেমে এসেছিল।স্বামীজী বলেন,একবার ভেবে দেখুন,হাজার বছর ধরে তিনি মানবতার কাছে পূজিত হয়ে আসছেন।এটা তো এমনি হয় না!কারণ তিনি স্বয়ং জীবাত্মা এবং এমন এক জীবাত্মা যিনি সমুদয় জগৎকে নিজের হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন।এমন ঈশ্বত তনয়ের ভিতর দিয়েই ঈশ্বর দর্শন সম্ভব।আপনি ও আমি অতি সাধারণ মানুষ।আমাদের পক্ষে ঈশ্বর দর্শনের অন্য কোনো উপায় নেই।ঈশ্বরের প্রতিবিম্ব আমাদের সকলের মধ্যে আছে কিন্তু তা আমরা খুঁজে পাই না।


আমরা বিশ্বাস করি, ঈশ্বর আছে কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাই না।তাই যীশুকে ঈশ্বর হিসাবে দেখলেই ঈশ্বর দর্শন সম্ভব।যীশু একজন প্রাচ্যদেশীয়।বাইবেলে যে সমস্ত উপমা ও রূপকের ব্যবহার আছে তাতে স্পষ্ট তিনি প্রাচ্য দেশীয়।তাঁর অবস্থান ছিল এশিয়ায়।এশিয়ার বাণী চিরদিন ধর্মের বাণী আর ইউরোপের বাণী চিরদিন রাজনীতির।প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গায় স্বকীয়তা দেখিয়েছে।
মহামানব যীশু বলতেন,এ জগৎ কিছুই নয়,ইহা অপেক্ষা আরো উচ্চতর কিছু আছে।তিনি নিজে যা উপলব্ধি করেছেন,তাই প্রচার করেছেন।যীশু নিজের সম্পর্কে বলেছেন, “শিয়ালের একটা গর্ত থাকে,আকাশচারী পাখির একটা বাসা থেকে।

কিন্তু মানবপুত্রের(যীশু)মাথা গুঁজিবার এতটুকু স্থান নেই।”এটাই মুক্তির পথ।নিজেকে বিশ্বের মধ্যে বিলীন করার এমন উদাহরণ পৃথিবীতে নেই।তিনি নিজেকে “আত্মা” বলে জানতেন।তিনি জানতেন,শুধু মানব জাতির কল্যাণের জন্য তাঁর দেহ ধারণ।তিনিই শেখালেন,ত্যাগই আদর্শ।আমাদের উপনিষদ এই ত্যাগের বার্তাই দিয়েছে।আপনারা সকলেই সেই ‘আত্মা’ ।শুধু নিজেকে আত্মা বলে চিনতে হবে।কিন্তু আমার মধ্যে ও তোমার মধ্যে ‘আমি’ যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন আমরা প্রকৃত আত্মাকে খুঁজে পাবে না।এই প্রসঙ্গেই স্বামীজি তাঁর গুরু রামকৃষ্ণের কথা বলেন।

রামকৃষ্ণ বলতেন,আমি ও আমার অজ্ঞান আর তুমি ও তোমরা হলো ‘জ্ঞান’।স্বামীজি যীশুর একটি গল্প বলেন ।একবার এক ধনী যুবক যীশুর কাছে গিয়ে বলেন,প্রভু,অনন্ত জীবন লাভ করার উপায় কি? প্রভু বলেন,তুমি বাড়িতে যাও।গিয়ে তোমার যা আছে সব বিক্রি করে দরিদ্রদের মধ্যে বিলি করে দাও।তারপর পথে নেমে আসো।পথ তোমাকে অনন্ত জীবনের রাস্তা চিনিয়ে দেবে।
এরপর স্বামীজি বলেন,মহাপ্রভু যীশু স্বয়ং আত্মা।তিনিই এই বিশ্বের পথ প্রদর্শক।তোমাদের আর আমাদের সকলের উচিত সেই ত্যাগের পথে এগিয়ে যাওয়া।

Happy
Happy
33 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
67 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!