হাবরার রেল বস্তিতে আগুন লেগে সর্বশান্ত প্রায় ৫০টির বেশি পরিবার
নিউজ ডেস্ক: হাবরার রেল বস্তিতে আগুন লেগে সর্বশান্ত প্রায় ৫০টির বেশি পরিবার। চারিদিকে হুড়োহুড়ি, আগুন নেভানোর চেষ্টা, আর্তনাদ, শেষ সম্বল বাঁচানোর লড়াইয়ের মাঝেই যেন অন্য চিত্র ধরা পরল হাবরার রেলপাড়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলে।
এমন ছবি দেখলে আপনার মনে হবে, সত্যিই কারোর পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ।আগুন তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে, সকলেই তখন ঘটনাস্থলের চারিদিকে নিজেদের শেষ সম্বল বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছেন। ধোঁয়ায় ঢেকে গোটা এলাকা। নিজেদের ঘরবাড়ি চোখের সামনে ছাই হয়ে গিয়েছে, কোথায় থাকবেন তারা! কোথায় আশ্রয় নেবেন কিছুই ভেবে উঠতে পারছেন না, ঠিক সেই সময়ই কিছু মানুষ সেইসব পুরে যাওয়া বস্তির থেকে টাকা পয়সা, সোনাদানা সহ মুল্যবান জিনিস পত্র হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালালেন বলেই অভিযোগ তুললেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই শেষ সম্বল খোঁজার নামে করে টাকা পয়সা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র সোনার গয়না খুঁজতে দেখা গেল পুরুষ মহিলা উভয়কেই। তাদের অনেকেই ওই বস্তিতে থাকা মানুষের অচেনা। পোড়া জিনিসপত্র কুড়িয়ে এনে তা ধুয়ে সেখান থেকে পয়সা, সোনাদানা নিয়ে কিছুটা ফাটকা মুনাফার উদ্দেশ্যেই এই কাজ করে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তাদের সামাল দিতে রীতিমতো দমকল কর্মীদেরও বেগ পেতে হল। পাশাপাশি কিছু অতি উত্সাহী মানুষ এসে দাঁড়িয়ে দেখলেন কীভাবে আগুন জ্বলছে, কেমন দেখাচ্ছে আগুন, কতগুলি বাড়ি পুড়ল! মোবাইলে উঠল ছবি, ভিডিও। যেন কোনও আকর্ষণীয় জিনিস, না দেখতে পারলেই জীবন বৃথা। মানুষের হাহাকার চিত্কার শুনতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষই এসে জড়ো হলেন।
তবে হাবরা রেলপারের বস্তির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ছবি ধরা পরলো তা বিরল। পুড়ে যাওয়া বাড়িগুলি থেকে খুঁজে পাওয়া জিনিস বাছাই হল পাশেই। একদল যুবক তখন মাথা গুঁজে এক নাগাড়ে খুঁজে চলেছেন টাকা পয়সা। অপরদিকে, শাড়ি সিঁদুর পড়া এক গৃহবধূকে দেখা গেল পুড়ে যাওয়া কিছু অংশ থেকে সোনার জিনিস ভেবে তা নিয়ে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। প্রশ্ন করতেই সকলের দাবি, তাদেরও ওখানে ঘর ছিলো। কিন্তু নির্দিষ্ট কোন ঘর নয়। যে যেখানে পেরেছে লুট চালিয়েছে বলেই এক প্রকার অভিযোগ জানালেন স্থানীয় ওই বস্তি এলাকার প্রকৃতই সর্বশান্ত হওয়া পরিবারের সদস্যরা।
হাবরা এক নম্বর রেল গেটের রেল কলোনিতে প্রায় ৫০ টি ঝুপড়ি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। এই মুহূর্তে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক। হাবরা পৌরসভার পক্ষ থেকে ৪০ টি পরিবারকে স্কুল ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।