বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দু অধিকারীর
নিউজ ডেস্কঃ সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একসময়ে সিঙ্গুর আন্দোলনের সদস্য ছিলেন তিনি। সেই শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছে বাংলা থেকে শিল্প তাড়াতেই সিঙ্গুর আন্দোলন করা হয়েছিল। কোনও আন্দোলনই ছিল না সিঙ্গুর আন্দোলন। শিল্প তাড়াতেই সেটা করা হয়েছিল। শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গুর আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে একাধিকবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনশন মঞ্চে দেখা গিয়েছিল। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই হঠাৎ করে শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কারণ নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর আন্দোলন ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাইল স্টোন। এই দুই আন্দোলনের উপরে ভর করেই বাম শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন তিনি। তাতেই নতুন করে জল্পনার পারদ চড়েছে।
সিঙ্গুর আন্দোলনকে তৃণমূল কংগ্রেসের মাইলস্টোন বলা হয়ে থাকে সেই সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন শিল্প তাড়ানোর জন্যই করা হয়েছিল সিঙ্গুর আন্দোলন। যদিও সেসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সিঙ্গুর আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন তিনি। এবং আন্দোলনের বেশ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরেই। সেই শুভেন্দু অধিকারীর এই দাবি রাজনৈতিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। গতকাল ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে বিজেপির অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
সিঙ্গুরের আন্দোলনকে কোনও আন্দোলনই নয় বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুধু সিঙ্গুর আন্দোলন নয় নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়েও একই ভাবে শাসক দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এর আগে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘লালকৃষ্ণ আডবাণী না এলে কেউ নন্দীগ্রামে ঢুকতেও পারত না। নন্দীগ্রাম নিয়ে ৬২ দিন বিজেপি সাংসদরা লোকসভা অচল করে দিয়েছিল। শিকড় গভীরের চলে গিয়েছে, উপড়ানো মুশকিল। আমি লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়েছিলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও হারিয়েছি। সবাইকে এককাট্টা হতে হবে, আমাদের লড়াই হবে। এখানে অনেক ফসল কেস রয়েছে। সেই সব কেস সম্বন্ধে তথ্য জোগাড় করেছি।’
শুভেন্দু অধিকারীর সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে মন্তব্যের পর সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। শুভেন্দু অধিকারীকে গণ্ডার বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এত দিন একরকম জানতাম। এখন তো দেখছি ও গন্ডার প্রজাতির। এখন পিঠে সুড়সুড়ি দিলে ১০ বছর বাদে হেসে ওঠে। সিঙ্গুর আন্দোলন যখন হয়, তখন তৃণমূল ক্ষমতায় ছিল না। পরে কোর্টের রায়ে প্রমাণিত হয়, আন্দোলনটি বৈধ ছিল। কারণ সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছিল, জমি অধিগ্রহণটি ভুল হয়েছিল। ওটি ২০০৫-০৬-০৭ সালের আন্দোলন। তার পর শুভেন্দু তৃণমূলের সাংসদ হয়েছেন। ওঁর বাবা-সহ গোটা পরিবার তৃণমূলের মন্ত্রী-সাংসদ হয়েছেন। তা হলে ওঁরা এই পদগুলি নিলেন কেন? কেন ক্ষমতা ভোগ করলেন? নন্দীগ্রাম মানুষের আন্দোলন ছিল। মমতাদি নেতৃত্ব দিয়েছেন। অন্যান্য অনেক দল ছিল। পরে তাঁর প্রতিনিধি করে শুভেন্দুকে পাঠানো হয়েছিল।