তৃণমূল দু-ভাগ ?
নিউজ ডেস্কঃ তৃণমূল দু-ভাগ হয়ে যাচ্ছে আবাস যোজনায় দুর্নীতির প্রশ্নে। যত পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসছে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করছে। তৃণমূল বনাম তৃণমূল যুদ্ধ শুরু হয়ে যাচ্ছে। তার ফলে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে বুমেরাংয়ের আশঙ্কা করছে কোচবিহার তৃণমূল।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই কোচবিহারে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরম আকার নিয়েছিল। তার ফলে কোচবিহারে অনেক আসনে হারতে হয়েছিল। তৃণমূলের নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ছিল লাগামছাড়া। তার ফলে বিজেপির সুবিধা হয়ে গিয়েছিল। এবং তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে ২০১৯-এর নির্বাচনেও উত্তরবঙ্গে তৃণমূলকে গোহারা হারিয়েছিল তারা।
২০২১-এর নির্বাচনে তৃণমূল আবার কামব্যাক করেছিল উত্তরবঙ্গেও। সমস্ত অন্তর্দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে উত্তরেও জয়ের রথ চালিয়েছিল তারা। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আবারও তৃণমূলে অন্তর্দ্বন্দ্বের বীজ বুনে দিয়েছে আবাস দুর্নীতির অভিযোগ। একদিন আগেই মুর্শিদাবাদে গণইস্তফা দিয়েছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। এবার কোচবিহারে ঢুকে পড়ল আবাসের কাঁটা।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে রাজ্যজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। বাদ পড়েনি কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জও। রবিবার সকালে আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির সামনে জমায়েত হন তুফানগঞ্জ-২ নম্বর ব্লকের বারকোদালি-১ গ্রামের বাসিন্দারা।
অভিযোগ স্থানীয় মানুষ ঘরের দাবিতে সময় পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে গেলে দুর্ব্যবহার করা হয়। প্রতিবাদে বারকোদালি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তারাগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ চলে। অবরোধের জেরে উত্তর-পূর্ব ভারত সংযোগকারী জাতীয় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রকৃত গরিবদের নাম থাকার কথা থাকলেও শাসকদলের ধনী ব্যক্তিদের নাম রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। যাঁদের মাথার উপর চাল নেই তাঁদের অনেকেরই নাম ঘরের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর আবাস যোজনার নামের তালিকায় স্থান পান তাঁরাই, যাঁদের দোতলা ছাদযুক্ত বাড়ি রয়েছে। বাড়িতে ফ্রিজ রয়েছে।
এই একই অভিযোগ তুলে আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে মাথাভাঙায় তৃণমূল বনাম তৃণমূল সংঘাত শুরু হয়। পাকা বাড়ি সত্ত্বেও আবাস তালিকায় অঞ্চল সভাপতি ও তাঁর বাবার নাম রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বুথ সভাপতি। স্বজনপোষণের এই অভিযোগ সামনে আসতেই তৃণমূলে শুরু হয় কোন্দল। পাল্টা অঞ্চল সভাপতি সাফাই দেন, যদি তাঁর নাম ভুলক্রমেও থাকে, তিনি পদত্যাগ করবেন এবং নিজেদের নাম সরিয়ে নেবেন।
নিয়ে জনরোষের আশঙ্কায় ইস্তফা দেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ ১৭ জন সদস্য। শনিবার বিডিও অফিসে গিয়ে পদত্যাগ করেন ভরতপুরের মালিহাটি পঞ্চায়েতের সদস্যরা। এদিন বিডিও হাতে গণইস্তফাপত্র তুলে দেওয়ার পর প্রধান বলেন, গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষেরা ঘর পাননি। মাটির ঘর অথচ তাঁদের নাম নেই তালিকায়। আমরা পদে থেকেও তাঁদের জন্য কিছু করতে পারছি না। সেই কষ্ট বুকে নিয়ে আমরা ইস্তফা দিচ্ছি।