সাফল্যের শিখরে যেতে ‘ইতিহাস’কে নিশানা মোদীর
নিউজ ডেস্ক: নয়াদিল্লির ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে বীর বাল দিবসের অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বললেন দেশকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যেতে ভারতকে অতীতের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত হতে হবে। এই বছরের শুরুতে গুরু গোবিন্দ সিং-এর জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘোষণা করেছিলেন ২৬ ডিসেম্বরকে বীর বাল দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
এবারই প্রথম ২৬ ডিসেম্বর বীর বাল দিবস পালন করা হচ্ছে। এই দিনে গুরু গোবিন্দ সিং-এর দুই পুত্র জোরওয়ার সিং এবং ফতে সিং নিজেদের বিশ্বাস রক্ষা করতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাকে স্মরণ করতে এই বীর বাল দিবস।
প্রসঙ্গত ১৭০৪ সালের ডিসেম্বরে সিরহিন্দে বন্দি করা হয় গোবিন্দ সিং-এর দুই পুত্র জোরওয়ার সিং এবং ফতে সিংকে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে তাঁদের মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা করতে অস্বীকার করলে, ঔরঙ্গজেবের অধীন মুঘল শাসক উজির খান দুজনকে হত্যার নির্দেশ দেন। এর আগে গুরু গোবিন্দ সিং-এর অন্য দুই ছেলে অজিত সিং এবং জুজর সিং সেই মাসের শুরুতে চমকৌরের যুদ্ধে মারা যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিখ গুরু গোবিন্দ সিংজির দুই সন্তানকে হত্যা করা হয়েছিল। কেননা তাঁরা শিখ ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছেন, ঔরঙ্গজেব গুরু গোবিন্দ সিংজির দুই ছেলে জোরওয়ার সিং এবং ফতে সিংকে তলোয়ার দিয়ে হুমকি দিয়ে ধর্মান্তরিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তখনই তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঔরঙ্গজেব এবং তার লোকের দুটি নিষ্পাপ শিশুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে বলেছেন, সেই সময় ভারতে পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়েছিলেন গুরু গোবিন্দ সিং।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যেতে অতীতেতর সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত হতে হবে। তিনি গুরু গোবিন্দ সিং-এর দুই পুত্রের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে বলেছেন চমকৌর ও সিরহিন্দের ঘটনা মাত্র ৩০০ বছরের পুরনো। তিনি বলেছেন, একদিকে ছিল ধর্মের ক্ষেত্রে চরমপন্থী মুঘল সাম্রাজ্য আর অন্যদিকে ছিল দেশের গুরু-জ্ঞান ও তপস্যার প্রতীক। একদিকে ছিল সন্ত্রাসবাদ আর অন্যদিকে আধ্যাত্মবাদ। একদিকে সাম্প্রদায়িক হিংসা, অন্যদিকে উদারতাবাদ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বীরত্ব আর ত্যাগের জন্য বয়স বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইতিহাসের নামে যা শেখানো হয়েছে তা হীনমন্যতা বাড়ানো ছাড়া আর কিছু করেনি।