ঋষভ পন্থের উদ্ধারকারীরা সম্মানিত
নিউজ ডেস্কঃ ঋষভ পন্থ শুক্রবার ভোরে দিল্লি-দেরাদুন হাইওয়েতে রুরকির কাছে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। অল্পের জন্য প্রাণেও বেঁচে যান। ঋষভ যদি গাড়ির পাশে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকতেন, তাহলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মার্সিডিজের আগুনে বড় বিপদ হতে পারতো। তা হয়নি এক বাস ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরের তৎপরতায়।
পুলিশকে উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ভোর ৫টা ২২ মিনিটে ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে ঋষভের মার্সিডিজ কয়েকবার পাল্টি মারে, তারপর আগুন ধরে যায়। আগুন ধরার আগে ঋষভ গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে বেরিয়ে এসেছিলেন। তাঁর গাড়িটির থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে বাস থামিয়ে পন্থকে উদ্ধার করেন চালক ও কন্ডাক্টর। তাঁরাই অ্যাম্বুল্যান্স ও পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। ঠিক ৫টা ৪০ মিনিটে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল ১০৮ অ্যাম্বুল্যান্স। এরপর পন্থকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
অ্যাম্বুল্যান্সের ফার্মাসিস্ট মনু কুমার বলেন, আমরা গিয়ে দেখি গাড়িটি দাউদাউ করে জ্বলছে। বাসের চালক ও পরিচালক পন্থকে গাড়িটির কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যান। ঋষভকে দ্রুত স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়। তাঁর চোখে আঘাত লেগেছিল। নাকের কাছ থেকে রক্ত পড়ছিল। পিঠে ও পায়ের বেশ কিছুটা অংশ ছড়ে গিয়েছিল। পায়ে চোট লেগেছিল ভালোরকম। মনু পরিচয় জানতে চাইলে পন্থ বলেন, আমি ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ঋষভ পন্থ।
এরপর পন্থ বলেন, ভাই, আমার খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। ব্যথা কমানোর ইঞ্জেকশন দিন। এরপর ১০৮-এ কথা বলে সেই ইঞ্জেকশন দেন মনু। তখন ঋষভ অনুরোধ করেন কোনও ভালো বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মনু তখন পন্থকে সক্ষম হাসপাতালে নিয়ে যান, যেটি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরেই ছিল। ঋষভকে অ্যাম্বুল্যান্সেই জিজ্ঞাসা করা হয় কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল? তিনি বলেন, মনে পড়ছে না। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরে দেখে গাড়িতে আগুন ধরেছে। ঋষভ আরও জানান, আমি আগে কখনও একা গাড়ি চালাইনি। তাই দিল্লি থেকে রুরকিতে পরিবারের কাছে যাচ্ছিলাম। ঋষভের কাছে পরিবারের কারও নম্বর চাওয়া হয়। তিনি প্রথমে বলেন, মা ছাড়া কারও নম্বর মনে পড়ছে না। ঋষভের থেকে তাঁর মায়ের ফোনে ফোন করা হলে সেটি তখন স্যুইচড অফ ছিল। পরে পুলিশ পৌঁছে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়।
এরই মধ্যে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঋষভের উদ্ধারকারীদের সম্মানিত করল হরিয়ানা রোডওয়েজ। বাস-চালক সুশীল কুমার মান ও কন্ডাক্টর পরমজিৎকে শংসাপত্র ও স্মারক উপহার দেওয়া হয়। হরিয়ানা সরকারও তাঁদের সংবর্ধিত করবে। এই দুজন পানিপথে ফেরার পর ডিপোয় তাঁদের সম্মানিত করা হয়। হরিদ্বার থেকে বাস নিয়ে ফিরছিলেন সুশীল। তাঁদের মানবিকতার প্রশংসা করেছেন হরিয়ানার পরিবহনমন্ত্রী মূলচাঁদ শর্মা। হরিদ্বার থেকে বাসটি ছেড়েছিল ভোর ৪টে ২৫ মিনিটে। পানিপথের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দেখেই বাস থামিয়ে পন্থকে উদ্ধার করেন সুশীল ও পরমজিৎ। তাঁরা ঋষভ পন্থকে চিনতেই পারেননি প্রথমে।