ক্রমশ বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর তলিয়ে যাবে পূর্ব উপকূল আশঙ্কা ভূবিজ্ঞানীদের

0 0
Read Time:4 Minute, 41 Second

নিউজ ডেস্ক: বিংশ শতাব্দীর আগে প্রায় তিন হাজার বছর সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা স্থিতিশীল ছিল। এর পরবর্তী সময় থেকে মানব সমাজের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারের ফলে ক্রমশই বেড়ে চলেছে বিশ্ব উষ্ণায়ন। যার জেরে গোটা বিশ্বজুড়ে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটেছে, ক্রমশ বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। পৃথিবীর প্রত্যেকটি রেকর্ডিং স্টেশন থেকে উঠে আসছে জল স্তর বৃদ্ধির এই একই রিপোর্ট। ভূতত্ত্ববিদের মতে, আগামী কয়েক বছরে পূর্ব উপকূলে উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার ভূমিভাগ তলিয়ে যাবে। ৭০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত অঞ্চল সম্পূর্ণ লবণাক্ত হয়ে যাবে থাকবে না আর চাষযোগ্য জমি। আগামী ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে ভারতের প্রায় ৪০ কোটি মানুষ জীবিকা হারাবে। জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে তারা। সমুদ্রের জল প্রবেশ করায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায় চলে যাবে। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ভূবিজ্ঞানী।

এই সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে রাজ্যের সুন্দরবন অঞ্চল। ক্রমান্বয়ে এই জলস্তর বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের তলদেশে মিশবে গোটা সুন্দরবন। হারিয়ে যাবে জীব বৈচিত্র্য, সুন্দরবনের মাটি, ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। বিশেষত সুন্দরী গাছের জন্য প্রয়োজন হয় সাধু জল ও নোনা জলের সংমিশন বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সেই সুন্দরী গাছও অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। এই সুন্দরবনই বিভিন্ন সামুদ্রিক সাইক্লোন এর হাত থেকে রক্ষা করছে দুই বাংলাকে। ফলে মানচিত্র থেকে সুন্দরবন মুছে গেলে, বারংবার সামুদ্রিক ঝড়ের সম্মুখীন হবে পশ্চিমবঙ্গ। বাঁধ নির্মাণই সুন্দরবনকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপকহারে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ। ভূতত্ত্ববিদদের গবেষণা বলছে সামুদ্রিক ঝড়ের প্রভাবে সাগরদ্বীপের কেন্দ্রবিন্দু থেকে সমুদ্র সৈকতের দিকে যে দূরত্ব তা প্রায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার হ্রাস পেয়েছে। সমুদ্রের জল ঢুকে জলমগ্ন হয়েছে ওই চার থেকে পাঁচ কিলোমিটারের স্থলভাগ। বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে সাগরদ্বীপের প্রায় ৫০ শতাংশ ভূমিভাগ জলের তলায় চলে যাবে। সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে এই সাগরদ্বীপ অস্তিত্ব হারাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই একই প্রভাব পড়েছে দিঘার উপকূলবর্তী অঞ্চলে। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির পেছনে দায়ী মানব সমাজ। প্রকৃতি যেখানে প্রকৃতির মত উন্মুক্ত সেখানে প্রকৃতি অনেক সুন্দর। মানবজাতির হস্তক্ষেপই বিপদ ডেকে এনেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা উপকূলবর্তী অঞ্চলে সৌন্দর্যায়ন করতে গিয়ে প্রকৃতির উপর এই অবাঞ্চিত হস্তক্ষেপের ফলে বর্তমান সময়ে যেকোনো সামুদ্রিক ঝড়ের সম্মুখীন হতে হয় দীঘা কে। আগামী বেশ কয়েক বছরে মুম্বাই কলকাতা সহ পূর্ব উপকূলের একাধিক শহর সমুদ্রে তলিয়ে যাবে এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ভূ- বিজ্ঞানীরা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!