সুভাষ কথা
নিউজ ডেস্ক : মুক্তিযুদ্ধের অগ্রাধিনায়ক ও বীরশ্রেষ্ঠ বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৯৭ সালের২৩ শে জানুয়ারি উড়িষ্যার কটক শহরে। ও মাতা প্রভাবতী দেবী। তাঁর পিতা ছিলেন পেশায় খ্যাতিমান আইনজীবী এবং মাতা প্রভাতী দেবী ছিলেন উত্তর কলকাতার হাটখোলার ঐতিহ্যপূর্ণ দত্ত পরিবারের কন্যা।
শৈশবকালের সুভাষ তথা নেতাজি ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন। বিশ্বজগৎ সম্পর্কে তার জানার আগ্রহ ছিল আকাশচুম্বি। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য প্রথমে তাকে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপিয়ান স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে সেখানকার সাহেবি পরিবেশ তার ভালো লাগত না।তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তিনি কৃত্রিম জগতে দিন যাপন করতে পারবেন না। স্কুলের চার দেওয়ালের বাইরে বিশাল ভারতবর্ষ পড়ে রয়েছে। সেই সমগ্র ভারতবর্ষের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর তাদের কথা চিন্তা এবং দেশের হয়ে লড়াই করাই তার মূল লক্ষ্য ছিল।
এরপর তিনি ভর্তি হয়েছিলেন রাভেন্স কলেজিয়েট স্কুলে।এখানে শিক্ষকদের মধ্যে সুভাষের মনের স্থায়ী চাপ ফেলেছিলেন প্রধান শিক্ষক বেণীমাধব দাস। তিনি এক আদর্শবাদী মানুষ শিক্ষকতাকে মহান ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছেন । ছাত্রদের মনে নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে দিয়েছিলেন । তিনি বলেছিলেন , নৈতিকতার প্রতি আকর্ষণ না থাকলে মানুষ সত্যিকারের মানুষ হতে পারে না । ছাত্রজীবন থেকে ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে বিরাগের ভাব সৃষ্টি হয়েছিল । তার ছাত্রজীবনের এই বিরাগ ক্রমশঃ বিদ্বেষে পরিণত হয়ে ওঠে ।
এই সময় একদিন সুভাষ জানতে পারলেন , স্বদেশী আন্দোলনের সহায়ক বিবেচনা করে ইংরেজ সরকার, সরকারী কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেণীমাধব দাসকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
সুভাষ স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের সংগঠিত করে সরকারী আদেশের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানালেন । সরকারী হাইস্কুলের শিক্ষক বেণীমাধব দাস , তাকে শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে বদলী হতে হল সুভাষ তখন দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ।
এর পরবর্তীকালে তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম তীব্র হয়ে ওঠে এবং তিনি নিজেকে দেশের হয়ে তৎকালীন ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদের সাথে কঠিন লড়াইয়ে আবদ্ধ করেন। এরপর ফরওয়ার্ড ব্লক, আজাদ হিন্দ ফৌজ ইত্যাদি গঠনের মধ্যে দিয়ে দেশের হয়ে যুদ্ধে নামেন। তবে তাঁর মৃত্যু নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে। সঠিক তথ্য আজও অজানা।তাঁর এই অদম্য জেদ এবং সাহসের জন্য তিনি আজও সমগ্র ভারতবাসীর গর্ব ও অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্ব হয়ে সকলের কাছে অমর হয়ে আছেন।