ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা পেরোল ৪ হাজার!
নিউজ ডেস্ক::ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখায়র সময় পর্যন্ত শুধু তুরস্কেই মৃত্যু হয়েছে ২৯০০র ওপরে। আর সিরিয়ায় সংখ্যাটা প্রায় পনেরোশো।
কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের ভিতরে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে মৃতের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
সোমবার ভোরের ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তুরস্কের প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত সেখানে ৫৬০০-র ওপরে বাড়ি ধসে গিয়েছে। ধ্বংসের একই চেহারা সিরিয়াতেও। তুরস্কে এই ভূমিকম্পের পরে সেখানে সাতদিনের জাতীয় শোকের কথা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট।
তুরস্ক ও সিরিয়ার পাশে বিভিন্ন দেশ দাঁড়াতে শুরু করেছে। সাহায্য নিয়ে ভারতের প্রথম বিমান তুরস্কে গিয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর সি-১৭ বিমানে করে এনডিআরএফ-এর একটি দলকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। সঙ্গে জীবিতদের খুঁজে বের করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরকেও সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের কাউন্টি ফারা ডিপার্টমেন্ট থেকে ৭৮ সদস্যের অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে। ইউনিসেফ দুই দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে। দক্ষিণ কোরিয়া তুরস্ককে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমেরিকা তুরস্কে উদ্ধারকাজে সাহায্যকারী দল এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের দল পাঠাচ্ছে। রাশিয়ার তরফে উদ্ধার কাজে সিরিয়াকে সাহায্য কররার জন্য ৩০০ জন সৈন্যের ১০ টি দল পাঠানো হয়েছে।
তুরস্কের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছে সেদেশের সেনাবাহিনী। আহতদের নিয়ে একটি সামরিক বিমান ইস্তান্বুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। সেখানে থেকে আহতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে।
মঙ্গলবার সকালে তুরস্কে আরও একটি ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৬। এই পরিস্থিতিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে আটগুণ হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলেছে ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে প্রাথমিক রিপোর্টে মৃত বা আহতের সংখ্যা কম হলেও, পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। এই ক্ষেত্রেও তাই হওয়ার সম্ভাবনা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তুরস্ক ও সিরিয়া উভয় দেশেই ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে বহু মানুষ আশ্রয়হীন পড়েছেন, যা বিপদকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সিরিয়ায় যেসব এলাকায় ভূমিকম্পের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে তার মধ্যে সরকার এবং বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। বিদ্রোহীদের দখলে থাকা এলাকায় মৃতের সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে সাতশো। কারাগারের দেওয়াল ধসে পড়ায় সেখান থেকে বহু আইএস জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার খবরও প্রকাশিত হয়েছে সেখানকার সংবাদ মাধ্যমে।