শ্যামবাজারে দেড়লক্ষ টাকায় বিক্রি ফুটপাথের দোকান

0 0
Read Time:4 Minute, 9 Second

নিউজ ডেস্ক : সমস্ত কোলকাতায় বিশেষে করে উত্তর,দক্ষিণ ও মধ্য কোলকাতার প্রায় সব ফুটপাথটাই দোকানিদের দখলে। বছরের পর বছর ধরে চলেছে এই অবস্থা। পৌরসভা বার বার করে জানিয়েছে যে ওই অধিকার করা জায়গা হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু এমনি একটি চারফুট জায়গা দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক জন আরেক জনকে আজীবন ‘ভোগ-দখলের অধিকার’ দিচ্ছেন! এমনকি, কোর্ট পেপারে দু’পক্ষের সইসাবুদ করে লেখাও হয়ে থাকছে সেই কথা।

খবরটি আজ প্রকাশ পেলেও জানা যায়,গত শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফোন করে এক মহিলা শ্যামবাজার চত্বরের ফুটপাতে জায়গা ‘কিনেও’ বসতে না পারার অভিযোগ করেন। সেই সূত্র ধরেই সামনে আসতে শুরু করেছে ফুটপাত ঘিরে টাকা লেনদেনের এমনই অজস্র অনিয়মের কথা। আসলে কোলকাতায় এটাই এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।


মেয়র ও মেয়র পরিষদ (হকার পুনর্বাসন) স্পষ্ট করে বলেছেন, সম্পূর্ণ ঘটনাটাই বেআইনি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (হকার পুনর্বাসন) দেবাশিস কুমারও বলেন, ‘‘দু’পক্ষেরই কড়া শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।’’

কাশিপুরের মনিকা জানা সাংবাদিকদের বলেন,বছরকয়েক আগে তিনি শ্যামবাজারের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের একটি ফুটপাতের দোকান মাসিক পাঁচ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। ওই দোকানটি আগে চালাতেন পার্থ দাস নামে এক ব্যক্তি। তিনি শ্যামবাজার এলাকার কৃষ্ণরাম বসু স্ট্রিটে থাকেন। বছর পঁয়ত্রিশের পার্থের থেকেই তিনি দোকানটি নিয়েছিলেন। সেই সময়ে ৩৫ হাজার টাকাও দেন দোকানের নিরাপত্তা বাবদ। সবটাই কোর্ট পেপারে লেখা রয়েছে।

মণিকা বলেন, ‘‘২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্থ আমাকে জানায়, ওর টাকার দরকার। তাই দোকানটা বিক্রি করে দিতে চায়। তখন দেড় লক্ষ টাকায় রফা হয়। আগে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া ছিল। ফলে আরও ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দিই। দু’পক্ষই কোর্ট পেপারে সই করি। সবটাই ভিডিয়ো করা রয়েছে।’’ সরকারের জায়গা একজন দখল করে আছে দীর্ঘদিন।তারপর সেই জায়গাই অন্যের কাছে বিক্রি করে দেওয়া যে কি করে যায় তা বোঝা যাচ্ছে না!

এর পরেই ঘটনা অন্যদিকে গড়ায়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মারা যান পার্থ বাবু। তাঁর স্ত্রী, বছর বাইশের মঞ্জরী বসাক এখনও উত্তর কলকাতার একটি কলেজে পড়েন। তাঁদের বছর দেড়েকের একটি ছেলে রয়েছে। পার্থের মৃত্যুর পরেই দোকানটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হয় তাঁর পরিবারের তরফে। তাতেই গোল বাধে।

পার্থের দাদা বাবুয়া দাস বলেন, ‘‘ভাই মারা যাওয়ার পরে আমরা দোকানটা আর ভাড়া দেব না ঠিক করি। তখন মণিকা বলতে শুরু করেন, সেটা নাকি ওঁকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। স্বামীহারা হয়ে ছেলেকে নিয়ে মঞ্জরী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এই জন্যই দোকানটা ছেড়ে দিতে বলি।” ঘটনা যাই হোক না কেন,ঘটনা যে সম্পূর্ণ বেআইনি তা সকলেই স্বীকার করছেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!