সাগরদিঘির উপনির্বাচনে কেন হার তৃণমূলের!
নিউজ ডেস্ক : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর এতদিন পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। যে নির্বাচন হয়েছে, সেখানেই জয়যুক্ত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সাগরদিঘির জেতা আসলে হঠাৎ পরাজয় তৃণমূলকে ভাবিয়ে তুলেছে। কেন কংগ্রেসের কাছে হারতে হল, তা জানতে তৃণমূল গড়েছে কমিটি, সেই কমিটি রিপোর্ট পেশ করল।
কেন তৃণমূল হারল সাগরদিঘিতে? বাম-কংগ্রেসের জোট আর বিজেপির সহযোগিতা মিলিত হতেই কি হার তৃণমূলের? নাকি তৃণমূলের থেকে সমর্থন সরে যেতে শুরু করেছে? পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই সারসত্য খুঁজে বের করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইজন্যই সাগরদিঘিতে হারের পর কমিটি তৈরি করেন তিনি।
সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্র মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেখানে ৬৮ শতাংশ ভোট সংখ্যালঘু। এমন কেন্দ্রে তৃণমূলের হারের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে পড়ে, তবে কি সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক মুখ ঘুরিয়ে নিতে শুরু করেছে তৃণমূলের থেকে। তৃণমূল মুখ কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও বিজেপির অনৈতিক জোটের দিকে আঙুল তুললেও তারা অশনি সংকেত দেখছে সংখ্যালঘু ভোটে বাম-কংগ্রেস থাবা বসানোয়।
সাগরদিঘি নিয়ে যে রিপোর্ট পেশ করেছে তৃণমূলের কমিটি তাতে উল্লেখ করা হয়েছে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ধসের কথা। সেখানে বলা হয়েছে, ভোটের ফলে দেখা যায়, তৃণমূলের দখলে থাকা সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকে থাবা বসিয়েই কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জয়ের পথ মসৃণ করেছেন। অর্থাৎ কংগ্রেস সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়ে যে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে অ্যাডভান্টেজ পেয়েছে, তা মেনে নিয়ে তৃণমূলের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’।
সেইমতো তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের কমিটি রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে। সেই রিপোর্ট তাঁরা পেশ করবেন তৃণূমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সেখানে তৃণমূলের একাংশের সাবোতাজের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, তৃণমূলের সব অংশের কর্মীরা সাগরদিঘির ভোটে সমানভাবে অংশ নেননি। নির্বাচনে হারের পর্যালোচনা করে এমনই তথ্য উঠে এসেছে কমিটির কাছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সংখ্যালঘু পাঁচ মন্ত্রীদের একটি কমিটি গড়ে তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সাগরদিঘিতে হারের কারণ খতিয়ে দেখতে। সেইমতো তাঁরা দু’দিন ধরে পর্যালোচনা করেন সাগরদিঘিতে কেন হার তৃণমূলের। বিভিন্ন নেতা-নেত্রী থেকে শরু করে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা।
পাঁচ সদস্যের কমিটির কাছে প্রায় ২৫টি কারণ উঠে আসে। যার মধ্যে অন্যতম হ’ল, বহু কর্মীর ভোটের সময় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ না করা। উন্নয়নের বিষয়গুলোও ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া যায়নি একাংশ নেতা-কর্মীদের গা ছাড়া মনোভাবে। সেইসঙ্গে প্রার্থীর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। একাংশ কর্মীর নিষ্ক্রিয় থাকা ও গোষ্ঠীকোন্দল বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায় তৃণমূলের কাছে।