Job Scam : ‘অয়নের চেম্বারে ভিড় হতো বিরাট কোনো ডাক্তারের চেম্বারের মতো’ – নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা

0 0
Read Time:4 Minute, 38 Second

নিউজ ডেস্ক : ‘অয়ন’ এখন নিয়োগ দুর্নীতির কেন্দ্রীয় চরিত্র। তার ইতিহাস অনেক মানুষের ইতিহাসকেই হার মানাবে। অয়নের বিরুদ্ধে একাধিকবার থানায় অভিযোগ জানালেও কোনো অজ্ঞাত নির্দেশে পুলিশের সাহস হয় নি অয়নের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, হুগলির বাড়িতেই ছিল অয়নের কার্যালয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক সমাজকর্মী বলেন, “প্রতি দিন সকাল থেকে সেখানে ডাক্তারের চেম্বারের মতো ভিড় জমত।” অয়নের সহযোগীদের কাছে নাম লিখিয়ে কাগজপত্র জমা দিয়ে অপেক্ষা করতে হত। তার পরে এক এক করে ডেকে পাঠাতেন অয়ন। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে কোথায় কোন পদে চাকরির ব্যবস্থা করা যাবে এবং তার জন্য কত টাকা দিতে হবে তা জানানো হতবলেই অভিযোগ।

এবার একে একে মুখ খোলা শুরু করেছে অনেকেই। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কাছে অনেকেই তাদের অভিযোগ জানাচ্ছেন। ২০১৫ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে গ্রুপ-সি-তে চাকরির জন্য দুই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন মানিকতলার বাসিন্দা এক তরুণী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “একটা তালিকায় আমার নাম দেখানো হয়েছিল। তার পরে আরও তিন লক্ষ দিয়েছিলাম। কিন্তু নিয়োগের ডাক আসছিল না।” ওই তরুণী আরও বলেন “এক দিন শুনলাম যাঁর মাধ্যমে প্রথমে টাকা দিয়েছি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আবার, অয়নের অফিসে যে যুবক কাজ করতেন, প্রতিবাদ করায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। এ সব শুনে আমরা চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।” হুগলির বাসিন্দা আর এক যুবক স্কুল শিক্ষকের চাকরির জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “জেলা পরিষদের এক সদস্যের মাধ্যমে অয়নের কাছে গিয়েছিলাম। সকাল থেকে ওঁর বাড়ির সামনে ভিড় উপচে পড়ত। অনেকেই শুনতাম পুরসভাতে চাকরির জন্যও কাগজপত্র জমা দিয়েছেন।” এভাবেই অয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমা শুরু হয়েছে এখন।

স্বজনপোষনের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ বরানগর পৌরসভার বিরুদ্ধে। যদিও সেই অনিয়মের তালিকায় পানিহাটি,কমারহাটি,উত্তর ও দক্ষিণ দমদম,উত্তর বারাকপুর ইত্যাদি অনেক পৌরসভারই নাম আছে। তবে বরানগর পৌরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ তীব্র। অভিযোগ, অয়নের হাত ধরেই ২০১৭ সালে বরাহনগর পুরসভার বেশ কয়েক জন চেয়ারম্যান পারিষদ, কাউন্সিলরদের কারও ছেলে, নাতনি, ভাইপো, মেয়েরা ইঞ্জিনিয়ার, পুরসভার স্কুলের শিক্ষক, অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের করণিক-সহ বিভিন্ন পদে চাকরি পেয়েছেন। কারও ভাইপো ও মেয়ে আবার চাকরি পেয়েছেন পাশের পুরসভায়। আবার রাজ্য পুরকর্মী সংগঠনের প্রভাবশালী নেতার নিকটাত্মীয়ও চাকরি পেয়েছেন ওই পুরসভায়। অভিযোগ, ২০১৭-তে অয়নের সংস্থার মাধ্যমে চাকরি পাওয়া ১৮-২০ জন দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকলেও তাঁদের বেতন হচ্ছে। চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, “কেউ কারও আত্মীয় হতেই পারেন। তিনি যোগ্যতা অনুযায়ী পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাওয়ায় অন্যায়ের কিছু নেই। আর যাঁরা মাঝেমধ্যেই অনুপস্থিত হচ্ছেন, তাঁদের শো-কজ় করা হয়েছে।” এখন সব বল অয়ন ও ইডির হাতে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!