ফিরহাদ হাকিম কি অন্য কিছু ভাবছেন ?
নিউজ ডেস্কঃ দলেরই বিধায়ক তথা মন্ত্রীর বিরোধিতা করে গেলেন ফিরহাদ হাকিম। দলের অবস্থানের উল্টো পথে হেঁটেও তিনি সতীর্থদের সমালোচনা করকেও পিছপা হলেন না। এভাবে একেরপর এক মন্ত্রীরর বিরোধিতা রাজ্য রাজনীতিতে উসকে দিল জল্পনা। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন তাহলে কি ফিরহাদ হাকিম অন্য কিছু ভাবছেন?
সম্প্রতি বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে মুখ খোলায় দল সেন্সর করেছিল ফিরহাদ হাকিমকে। দলের সেই সেন্সরকে অগ্রাহ্য করেই মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তিনি। উদয়ন গুহ ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তাঁরা চাকরি নিয়ে বা সিপিএম ও বামেদের নিয়ে যে অবস্থান নিয়েছেন তা মান্যতা দেননি ফিরহাদ।
এই অবস্থায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফিরহাদ হাকিম কেন ভিন্ন সুরে কথা বলছেন, তার মনে কি তাহলে অন্য কিছু রয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর দলবদল নিয়ে নানা জল্পনা রটেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এই নেতাও দলবদলে বিজেপিতে যেতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।
কিন্তু সেই জল্পনাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তৃণমূলে আরও গুরুত্ব বাড়িয়েছিলেন তিনি। তিনি একাধারে মেয়র, একাধারে ডাকসাইটে মন্ত্রী। যদিও মন্ত্রী হিসেবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতর সরিয়ে নিয়ে তাঁর ভার একটু লাঘব করা হয়েছিল। এখন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার বহিষ্কৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলে দলের রোষানলে পড়েন তিনি।
এখন তিনি বাম আমলে চাকরি নিয়ে ভিন্নমত পোষণা করলেন। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শুধু উদয়ন গুহকেই পাগল আখ্যা দিলেন না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্টো সুরে কথা বলে জানিয়ে দিলেন, চিরকুটে লোক ঢোকানো যায় না, নিদেনপক্ষে একটা অ্যাপ্লিকেশন লাগে! উদয়ন গুহের চাকরি নিয়ে মন্তব্যের বিরোধিতা ছাড়াও জ্যেতিপ্রিয় মল্লিকের বাম-বয়কট মন্তব্যেরও বিরোধিতা করেছেন।
তৃণমূলেরই আর এক মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ফের নিদান দেন সিপিএম তথা বামফ্রন্টকে বয়কটের। তার বিরোধিতা ফিরহাদ বলেন, সিপিএম বাড়ির কেউ যদি অসুস্থ হয়, একজন কাউন্সিলর ও বিধায়ক হিসেবে আমার কর্তব্য তাঁর পাশে দাঁড়ানো। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। একজন মানুষ হিসেবেও সেটাই কর্তব্য।
রাজ্যের মন্ত্রিসভার একের পর এক সদস্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলে তিনি একজন সাধারণ কাউন্সিলর ও বিধায়ক, সর্বোপরি একজন মানুষ হিসেবে কী কর্তব্য তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর এই কথাতেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। তিনি কি সেন্সর হওয়ার পর অন্যরকম কিছু ভাবছেন, তা নিয়ে চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে।