সর্বভারতীয় তকমা হারিয়ে মমতা-অভিষেকরা বিপাকে!
নিউজ ডেস্ক::জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারিয়ে এক গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলে শুরু হয়েছে পদ বিড়ম্বনা। এতদিন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ছিল। তাই পদও ছিল সর্বভারতীয় স্তরে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জাতীয় দলের তকমা ছিনিয়ে নেওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল এখন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় স্তরে যেমন বিভিন্ন পদ ছিল, তেমনই রাজ্যস্তরের পদও ছিল। তৃণমূলের কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেমনই রাজ্য সভাপতি ছিলেন সুব্রত বক্সি। আবার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সাধারণ সম্পাদকও রয়েছেন কুণাল ঘোষ-সহ অনেকে।
এই অবস্থায় সর্বভারতীয় পদগুলি বিলুপ্ত হয়ে গেলে পদ বিড়ম্বনা তৈরি হবে। হয় নতুন পদের সৃষ্টি করতে হবে তৃণমূলকে, নতুবা অনেক হেভিওয়েটকে পদ ছাড়তে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সর্বভারতীয় সহসভাপতি ও সম্পাদকদের দলে পদ দিতে গিয়ে কার ঘাড়ে কোপ পড়বে সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত ভোট লড়াইয়ের দিকে মন দেওয়ার আগে গভীর সঙ্কট তৈরি হয়েছে দলের পদ নিয়ে। স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদের এখন গুরুত্ব নেই। যে দলের জাতীয় দলের স্বীকৃতিই নেই সেই দলের কী করে সর্বভারতীয় সভাপতি বা সভানেত্রী থাকবেন, কী করেই বা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থাকবেন!
তৃণমূল কংগ্রেসে নতুন করে পদ-সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল সুপ্রিমো বলে পরিচিত হলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচিতি কী হবে, তা আরও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে দলে তাঁর পদ বিলুপ্তপ্রায়। যদিও তৃণমূল নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধে আইনি জবাব দিতে তৈরি হচ্ছে ।
সোমবার তৃণমূল ও সিপিআইয়ের জাতীয় দলের স্বীকৃতি প্র্ত্যাহার করে নেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন নতুন দল হিসেবে জাতীয় দলের স্বীকৃতি পায় আম আদমি পার্টি। একদিক দিয়ে দিদির দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্থান ঘটে আর জাতীয় দল হিসেবে ছাড়পত্র পায় ভাই অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পরই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়ে। জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারানোয় মমতা ও অভিষেক-সহ অন্যান্য জাতীয় পদাধিকারীদের কী হবে, দলীয় সংগঠনে তাঁরা কোন পদ পাবেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় চর্চা।
এরই মধ্যে আবার জাতীয় স্বীকৃতি হারানোর পরদিনই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুজিনহো ফেলেইরো। তিনি উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কাছে গিয়ে ইস্তফা দিয়ে আসেন। তাঁর ইস্তফা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে তৃণমূলে।