নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের ১০০ নেতা-বিধায়কের তিনজন জেলে,নিশানা শুভেন্দু অধিকারীর
নিউজ ডেস্ক::তৃণমূলের অন্তত ১০০ জন নেতা-বিধায়ক-সাংসদ নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সকালে বড়ঞার বিরাধয় জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারের পরে শুভেন্দু অধিকারী নিজের টুইটারে আরও সাতজন নেতা ও জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আক্রমণ শানিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারী এদিন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের একটি সুপারিশ পত্র দাবি করে অভিযোগ করেছেন, নিজের সাংসদ প্যাডে অন্তত সাত জনকে চাকরি দিতে সুপারিশ করেছিলেন তিনি।
একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতা মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খানের একটি সুপারিশ পত্র বলে দাবি করে অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের প্যাডে অন্তত ছয়জনের চাকরির সুপারিশ করেছেন তিনি।
রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি নিজের বিধায়ক প্যাডে অন্তত পঁচিশ থেকে ছাব্বিশজনের নাম চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলেন অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা। এর আগেও অখিল গিরির বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময় অখিল গিরি অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
ওই একই টুইটে শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক। নিজের বিধায়ক প্যাডে ওই বিধায়ক অন্তত ১১ জনের চাকরির সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। ২০২০ সালের সেই সুপারিশ পত্র তুলে ধরেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতা উল্লেখ করেছেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত চালানো হচ্ছে।
শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় তৃণমূল থেকে বিজেপি হয়ে ফের তৃণমূলে যাওয়া মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়ের সুপারিশ পত্র টুইট করেছেন। বিজপুরের বিধায়ক থাকার সময় শুভ্রাংশু রায় অন্তত ৯০ জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন চাকরির জন্য।
বিরোধী দলনেতা বলাগড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অসীম মাঝির সুপারিশ পত্র বলে দাবি করে ১১ জনের তালিকা টুইট করেছেন। সব ক্ষেত্রেই আবেদনকারীর নামের পাশে রোলনম্বরও দেওয়া রয়েছে। সব আবেদনই করা হয়েছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। শুভেন্দু অধিকারী সবকটি ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তোলামূল সার্ভিস কমিশন করে কটাক্ষ করেছেন।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরেই আদালতের নজরদারিতে তদন্ত শুরু করে ইডি-সিবিআই। গত জুলাই মাসে দীর্ঘ তল্লাশির পরে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ইডি। একইসঙ্গে তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে নগদে ৫০ কোটির বেশি এবং বহু কোটির গয়নাও উদ্ধার করে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি তথা নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে। পরে এই দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁর স্ত্রী ও পুত্রকেও গ্রেফতার করা হয়।
আর প্রায় ৬৫ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে সোমবার সকালে বড়ঞার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় বর্তমান বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিজাম প্যালেসে। তার বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।