পঞ্চায়েত ভোটের আগে শিলিগুড়িতে নয়া মডেল
নিউজ ডেস্ক::কংগ্রেসকে হারাতে তৃণমূলের সঙ্গে অলিখিত জোট করল বামেরা। ফলে নয়া এক মডেল উঠে এসেছে শিলিগুড়িতে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই নয়া জোট নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। আর বাম-তৃণমূলের এই জোটকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
কংগ্রেসকে হারাতে মরিয়া বামেরা। তাই তারা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতেও দ্বিধা করল না। এতদিন বিভিন্ন নির্বাচনে দেখা গিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের রাস্তায় হেঁটেছে। এ ব্যাপারে শিলিগুড়ি মডেল ছিল বিখ্যাত।
কিন্তু সেই শিলিগুড়িতেই ঘটে গেল বেনজির ঘটনা। কংগ্রেসকে হারাতে তৃণমূলের হাত ধরল বামেরা। শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়শনের নির্বাচনে এক ভিন্ন ছবি ধরা পড়ল এবার। এতদিন কংগ্রেস ও বামেরা জোট বেঁধে এই বার অ্যাসোসিয়েশন চালিয়ে এসেছেন।
এবার দুই জোটসঙ্গীই সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে চলেছে। ফলে প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে বাম-কংগ্রেসের শিলিগুড়ি মডেল। ২০০৯ সালে পুরভোটে যে মডেল তৈরি হয়েছিল, তা ভেঙে গেল শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে। সেখানে কংগ্রেসকে ঠেকাতে তৃণমূলের হাত ধরল বামেরা।
শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনে ১৬ আসনের লড়াই। এই লড়াই তৃণমূল ৮ আসনে লড়ছে আর বামেরা বাকি ৮ আসনে। ফলে ১৬ আসনে কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী বাম ও তৃণমূল। অথচ সেই শহর যেখানে তৃণমূলকে আটকাতে কংগ্রেসের মেয়র ও ডেপুটি মেয়রকে সমর্থন জানিয়েছিল বামেরা।
শিলিগুড়িতে সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য ও কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সির তৈর সেই জোট পরবর্তীকালে রাজ্য বাম-কংগ্রেসকে এক সূত্রে গাঁথতে সমর্থ হয়েছিল। এবার শিলিগুড়িতে কংগ্রেস বিরোধিতায় নয়া মডেল তৈরি হল। আগামী ২৯ এপ্রিল বারের নির্বাচন। সেখানে মনোনয়নের শেষদিন ছিল শনিবার।
শনিবার শেষদিনে দেখা যায়- সভাপতি পদে বামেদের প্রার্থী কোবিন্দ ভৌমিক মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। আর সম্পাদক পদে তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সদস্য অমিতাভ ভট্টাচার্য মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এর ফলে তারা ওই আসনে একে অপরকে সমর্থন করবে।
২০১৫ সাল থেকে শিলিগুড়িতে বাম-কংগ্রেস মিলে বার অ্যাসোসিয়েশন চালাচ্ছে। এবার সেখানে উলটপুরাণ ঘটে গেল। বাম-তৃণমূলের সেই জোটকে অশুভ জোট বলে কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস নেত্রী আইনজীবী গঙ্গোত্রী দত্ত। তবে কোনোকিছুই বাধা হবে না, তারাই জিতবেন বলে আশাবাদী কংগ্রেস নেত্রী।
আর বামেদের সঙ্গে হাত মেলানো প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির মেয়র জানান, ৫০ বছর ধরে তারাই বামেদের সঙ্গে লড়াই করে আসছেন, তাহলে কেন বামেদের সঙ্গে অযথা হাত মেলাতে যাবো। তৃণমূল তাদের নিজেদের শক্তিতে লড়বে।
সিপিএম নেতা জীবেশ সরকারা বলেন, আমাদের লড়াই তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে। তাহলে কেন সমঝোতা করতে যাবো তৃণমূলের সঙ্গে। যদি দলের কোনো আইনজীবী সেলের সদস্য জোট করে থাকে, তবে দলীয় আইন মেনে ব্যবস্থা নেবে দল।
আর শিলিগুড়ির বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে তৃণমূল ও বামেদের এই জোটকে কাঁঠালের আমসত্ত্ব বলে কটাক্ষ করেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর দাবি সিপিএমের এই জোট কোনো নতুন ঘটনা নয়। তলে তলে এরা জোট করে চলে, এটাই তার প্রমাণ।