অভিষেকের সভার পরই বিজেপিতে যোগদান
নিউজ ডেস্ক::অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রা শুরুর আগেই তৃণমূলে গণইস্তফার হিড়িক পড়েছিল কোচবিহারের তুফানগঞ্জে। দল বেঁধে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছিলেন ৩২ জন নেতা। আর তার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের ভাঙন। এবার আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে তৃণমূলের ভাঙন ধরল। বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূলকর্মীরা।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা করে গিয়েছেন ২৪ ঘণ্টা আগেই। তারপরই কালচিনিতে বিজেপির যোগদান কর্মসূচি হল। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে অভিষেকের জনসভার পর শুক্রবার দলের ভাঙন তাৎপর্যপুর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ভাঙনে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
শুক্রবার কালচিনির মোদীলাইনে তৃণমূল ছেড়ে ৪৩ পরিবার বিজেপিতে যোগদান করে। বিজেপিতে যোগদানকীরাদের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়। বিধায়ক বিশাল লামা দলীয় পতাকা তুলে দেন যোগদানকারীদের হাতে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁরা দল ছাড়েন বলে দাবি।
সম্প্রতি তুফানগঞ্জের ধলপল অঞ্চলের ৩২ পদাধিকারী ইস্তফা দেন তৃণমূল থেকে। বুথ সভাপতি থেকে শুরু করে অঞ্চল সভাপতি, ব্লক কমিটির সদস্যরাও এই ইস্তফার দলে ছিলেন। তবে তাঁরা কেউ বিরোধী দলে যোগদান করেননি। দলে পুরনো কর্মীরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না অভিযোগ তুলে ইস্তফা দিয়েছিলেন তাঁরা।
শুধু কোচবিহার বা আলিপুরদুয়ারই নয়, সম্প্রতি তৃণমূলে ভাঙন ধরে জলপাইগুড়ি জেলাতেও। ১০টি পরিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করে। তৃণমূল ছেড়ে প্রায় ২০০টি পরিবার তার আগে সিপিএমে যোগ দিয়েছিল বলে খবরে প্রকাশ। তার দুদিন পরই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন ১০টি পরিবারের সদস্যরা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে একের পর এক জেলায় তৃণমূলে ভাঙন ধরছে। তারপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন উত্তরবঙ্গে জনসংযোগ যাত্রা করছেন, তখনই দলে এই ভাঙন বিশেষ বার্তাবহ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে কি তৃণমূলের প্রতি মানুষের বিশ্বাস টলে গিয়েছে? নাকি এটি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফসল তা জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূল ভাঙছে। সম্প্রতি তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে থেকে তিন শতাধিক কর্মী সিপিএমে যোগদান করেছেন। যার মধ্যে নব্বই শতাংশই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক বলে দাবি সিপিএমের। রবিবার সন্ধ্যায় ডুয়ার্সের গয়েরকাটার সাঁকোয়াঝোরা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঙ্কুবাজারে এই দলবদলের ঘটনা ঘটে।
গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে ডুয়ার্সের চা ও কৃষি বলয়ে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সিপিএম শূন্যতে নেমে গিয়েছিল। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন দুর্নীতিতে কোণঠাসা শাসকদল। এই পরিস্থিতিতে শাসক তৃণমূলের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে কৃষি বলয়ের মানুষজনও। তারই প্রমাণ এই একের পর এক দলবদল।