মণিপুরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি থেকে ১৩ হাজার সাধারণ নাগরিককে উদ্ধার সেনাবাহিনীর
নিউজ ডেস্ক::মণিপুর হিংসা পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হলেও এখনও অব্যাহত উত্তেজনা। এই অবস্থায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি থেকে ১৩ হাজার সাধারণ নাগরিককে উদ্ধার করল সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এনেছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনী।
শুক্রবার মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এখনও অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ করে বেশ কয়েকটি এলাকায়। মণিপুরের বাড়ি, স্কুল, গির্জা এবং যানবাহন-সহ বেশ কিছু সম্পত্তিতে আগুন লাগানো হয়। এই পরিস্থিতিতে মানুষ অসহায় হয়ে রাস্তা নেমে আসে।
গত ৩ মে অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুরের একটি সমাবেশ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। রাজ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। চুড়াচাঁদপুরের তোরবুং এলাকায় ৬০ হাজারের বেশি লোক সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। তখনই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কাংপোকপি জেলার সাইকুলে প্রায় ১১ জন সাধারণ নাগরিক আহত হন।
এই ঘটনায় দু’জন বুলেটের আঘাতে মারা যান বলে জানা গিয়েছে। এখনও অবধি ব়্যাফ, সিআরপিএফ, বিএসএফ-সহ আধাসামরিক বাহিনীর ১৪টি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। আরও বাহিনী রাজ্যে মোতায়েন করার ব্যবস্থা হচ্ছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী আসাম এয়ারফিল্ড থেকে হিংসার চেহারা নেওয়া মণিপুরে পাড়ি দেয়।
তাঁরা মণিপুরে যাওয়ার জন্য সি ১৭ গ্লোবমাস্টার এবং এন ৩২ বিমান ব্যবহার করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী শুক্রবার একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, তাঁরা প্রায় ১৩ হাজার বেসামরিক নাগরিকদের উদ্ধার করতে সম্ভবপর হয়েছে। উদ্ধার করা বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।
বর্তমানে কোম্পানির অপারেটিং ঘাঁটি এবং সামরিক গ্যারিসনের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে তাঁদের। সেনাবাহিনীর দাবি, মণিপুরের চুরাচাঁদপুর, কাংপোকপি, মোরেহ এবং কাকচিং এলাকা এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে কোনো বড় ধরনের হিংসার খবর পাওয়া যায়নি।
মণিপুরের গভর্নর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে গুলি-অ্যাট-সাইট আদেশ অনুমোদন করেছিলেন। তারপরও এই ধরনের হিংসার ঘটনা ঘটে। অগ্নিসংযোগ এবং রাস্তা অবরোধের বিক্ষিপ্ত ঘটনাগুলি ছাড়াও ইম্ফলের বাকি লোকেরা বাড়ির ভিতরেই আটকে রয়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেনা।
মণিপুর রাজ্যে পুলিশের মহাপরিচালক পি ডুঞ্জেল জানান, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের গুলি-অ্যাট-সাইট আদেশই শেষ অবলম্বন। তিনি আরো বলেন, জনসাধারণ যদি চুপচাপ চলে যায় তাহলে এর কোনো প্রয়োজন হবে না। কিন্তু যদি হিংসা ছড়ায় তাহলে পুলিশকে আরও কড়া অবস্থান নিতে হবে।
তিনি জনগণকে আরও সতর্ক করে দেন যে, “ফ্ল্যাগ মার্চ চলছে। পুলিশ যেভাবে জনসাধারণের মোকাবিলা করে, সেনাবাহিনী কিন্তু সেভাবে আচরণ করে না। তাদের শত্রুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে তাদের ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।