বিজেপির ভোট সিপিএমে চলে যাবে! আশঙ্কা তথাগতের
নিউজ ডেস্ক::কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনের শোচনীয় হার স্বীকার করতে হয়েছে বিজেপিকে। বিজেপির এই হার থেকে শিক্ষা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন প্রবীণ নেতা প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, বিজেপি শিক্ষা না নিলে সব ভোট সিপিএমে চলে যাবে।
তথাগত রায় মনে করেন, কর্নাটকের হার বিজেপির কাছে ধাক্কা হতে পারে, কিন্তি এই ধাক্কা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। হার থেকে শিক্ষা নিয়েই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে হবে। তা না হলেই বিপদ! আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির অবস্থা হবে বেহাল!
কেন এমন কথা বললেন তথাগত রায়? আসলে তিনি নির্বাচনে কিছু ভুলের কথা তুলে ধরেন। যে ভুল কর্নাটকের মতো বাংলাও করেছে। তাই তিনি সেই ভুলগুলি তুলে ধরে বঙ্গ বিজেপিকে সাবধান করে দিলেন। একের পর এক টুইট বার্তায় তিনি এক এক করে বিজেপির ভুল ধরালেন।
তথাগত রায় তাঁর টুইট বার্তায় লেখেন- কর্নাটকের রাজনীতি সম্পর্কে আমি খুব কমই জানি। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি বিচার করে, আমার সন্দেহ ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের ভুলগুলি ২০২৩ সালে কর্নাটকের নির্বাচনে পুনরাবৃত্তি হয়েছিল! বিজেপিকে তার খেসারত দিতে হয়েছে।
তার থেকেও বড়ো কথা বিজেপি এই পরাজয়গুলি থেকে শিক্ষা নেয়নি। একুশে বাংলার পরাজয় থেকেও শিক্ষা নেয়নি, এবার কর্নাটকেও তাই একই হাল হয়েছে। এবার কর্নাটকের ফলাফল দেখে শিক্ষা না নিলে আসন্ন ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটবে।
তথাগত রায়ের কথায়, টিকিট বিতরণে যে ধরনের পক্ষপাতিত্ব হয়, তা বিজেপিকে সমস্যায় ফেলে দেয়। পশ্চিমবঙ্গে একুশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আবার ২০২৩-এ কর্নাটকের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেই একই ভুল। একই ভুল করে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছে বিজেপি।
পুরোনো সময়ের মতাদর্শিক নেতাদের থেকে তৃণমূল ও সিপিএম থেকে আসা বিদ্রোহীদের বেশি পছন্দ করছে বিজেপি। তার খেসারত দিতে হচ্ছে। বাংলার উদাহারণ তুলে ধরে তিনি জানান, এই যেমন মুকুল রায়- কেউ জানেন না তিনি এখন কোন দলের সদস্য! তাঁকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছিল। তা কি ভুল নয়!
এই মুকুল রায়কেই বঙ্গ বিজেপিতে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। তিনি সর্বদাই বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ঘিরে থাকতেন। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি থেকেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তারপর তিনি বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন।
তারপর দেখুন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। আর এক দলত্যাগী নেতা। তাঁকে বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী সদস্য করা হয়েছিল। তার কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি দল ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে যান। এই হঠকারী সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে। বিজেপি কিন্তু ঠেকে শিখছে না।
তাঁর কথায়, ‘জয় শ্রীরাম’ ত্যাগ করার দরকার নেই। কিন্তু ‘জয় মা কালী’ বা ‘জয় মা দুর্গা’ আমাদের বাঙালির হৃদয়ের অনেক কাছাকাছি। ভারতের প্রতিটি অংশে হিন্দুদের নিজস্ব ‘ইষ্ট দেবতা’ রয়েছে। বাংলায় মা কালী, ওড়িশায় প্রভু জগন্নাথ, অসমে শঙ্কর দেব। তা কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না।
কিন্তু বিজেপি সর্বদাই ভুলের উপর ভর করে চলছে। তার ফলেই বারবার পরাজয় স্বীকার করতে হচ্ছে। এই প্রবণতা চলতে থাকলে বাংলার মানুষ কিন্তু বিজেপিকে আর সমর্থন করবে না। বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক ফের বামেদের দিকে ফিরে যাবে, সেদিন আসন্য, তাই সাধু সাবধান!