নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে প্রথম তলব ইডির
নিউজ ডেস্ক::একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা শেষ করার পরেই ইডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তলব করে অভিষেককে। অভিষেক অবশ্য স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন,পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি যেতে পারবেন না। আগামী মঙ্গলবার ১৩ জুন বেলা ১১টায় তাঁকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির অফিসে দেখা করতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’কে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। সুজয়কৃষ্ণর ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ জুন। তার আগের দিনই অভিষেককে ডেকে পাঠাল ইডি। এখানেই রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা যে ওই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে ইডি জেরা করতে চায়।
এদিকে ওই বিষয় নিয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, ‘অভিষেক ব্যানার্জিকে আবার যেভাবে ডাকা হল তাতে বিজেপির মুখোশ একেবারে খুলে গেছে। নবজোয়ার–এ ভয় পেয়ে এর আগে একবার অভিষেককে ডাকা হয়েছে। তাঁর কনভয়ে হামলা হল। অভিষেকের স্ত্রীকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে বিমানবন্দরে আটকানো হল। তাঁর স্ত্রীকে ডেকে পাঠানো হল। এবার যখন ভোটটা ঘোষণা হল এবং বিজেপির কোনও সংগঠন নেই, প্রার্থী দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই, সেইসময় আবার অভিষেককে ডেকে পাঠানো হল।”
প্রসঙ্গত স্মরণীয় যে এর আগে অন্যান্য কারণে অভিষেককে ডাকা হলেও এবার সরাসরি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ডাকা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা
কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, নিয়োগ মামলায় অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। এ বিষয়ে প্রথমে আদালতে, পরে হেয়ার স্ট্রিট থানাতেও ইডি এবং সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান কুন্তল। ঘটনাচক্রে কুন্তল যেদিন এই কথা বলেন, তার আগেরদিনই শহিদ মিনারের কাছে অভিষেক তাঁর সভায় বলেছিলেন, এর আগে যখন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং বিধায়ক মদন মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন তাঁদেরকে অভিষেকের নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
তার প্রেক্ষাপটেই জাস্টিস গাঙ্গুলি বলেছিলেন তদন্তকারী সংস্থা প্রয়োজনে অভিষেককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। জাস্টিস গাঙ্গুলির সেই রায় নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ,সুপ্রিম কোর্টে যাতায়াত করলেও সেই রায় বজায় থাকে। এখন দেখার অভিষেক যদি না যায় তাহলে ইডির পরবর্তী পদক্ষেপ কি হয়? তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেন যে ঠিক নির্বাচনের আগে এভাবে অভিষেককে ডাকার পিছনে তদন্তকারী সংস্থার কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যেও থাকতে পারে।